ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিব হাসানের সমর্থনে জমজমাট প্রচারণার মধ্যদিয়ে শুরু হলো ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনী আমেজ। রোববার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজের নেতৃত্বে চলে নৌকার পক্ষে প্রথমদিনের জমজমাট প্রচারণা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠনের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতিতে চলে প্রচার ও গণসংযোগ।
ঢাকার এই গুরুত্বপূর্ণ আসনের প্রাক্তন সাংসদ, ইতিহাসের প্রথম ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে চলতি বছরের ৯ জুলাই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে সাংবিধানিক নিয়মানুসারে আসে উপনির্বাচনের ঘোষণা। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীতা অর্জনের লক্ষ্যে ৫৬ জন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক প্রার্থী মনোয়ন সংগ্রহ ও জনা দেন। পরবর্তীতে দলীয় হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে ঢাকা উত্তর মহানগরের পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ নেতা, উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক হাবিব হাসানকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্তভাবে নির্ধারন করা হয়।
উত্তর সিটির ৫৪ নং ওয়ার্ড থেকে শুরু হওয়া নৌকার প্রচারণা মিছিলটি কাউন্সিলর যুবরাজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেতাকর্মীরা উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ার অব্যাহত অগ্রযাত্রায় আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী হাবিব হাসানকে নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ বলেন, ঢাকা-১৮ আসন মাতৃতুল্য অভিভাবক বর্ষীয়াণ নেত্রী সাহারা খাতুনকে হারিয়ে আজো আমরা শোকে মুহ্যমান। তার স্থান পূর্ণ হবার নয়। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে যে আধুনিক ঢাকা-১৮ গড়ে তোলার কার্যক্রম তিনি শুরু করেছিলেন তা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রাপ্তির সম্ভাবনা জেগেছে। আমরা বিশ্বাস করি সেই লড়াই সফল হবে সাহারা খাতুনের একান্ত আস্থাভাজন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট নেতা, মুজিব সেনা হাবিব হাসানের হাত ধরে।
তিনি বলেন, দল ঢাকা-১৮ আসনের গুরুত্ব বিবেচনায় একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং নিবেদিত সমাজ সেবকের হাতেই ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিনিধিত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, অত্র আসনের সাধারণ মানুষ তাদের ভোটের মাধ্যমে সেই সত্যতা প্রমাণ করবে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের ভাষ্য, কম বেশি অনেক ক্ষেত্রেই নির্বাচনী প্রার্থীতা ইস্যুতে দলীয় মনোমালিন্যের কথা শোনা যায়। ঢাকা-১৮ আসনের এই প্রচারণা তাদের সকলের কাছে এই বার্তা দিতে চায় যে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাই দলের জন্য শেষ কথা। আর সম্মিলিতভাবে তা বাস্তবায়নেই দেশ ও দশের কল্যানে আমাদের কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক ইস্যু কোনোভাবেই যেন সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ না হয়। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশ ও দলের বিরুদ্ধ তৎপর, আমরা আমাদের ঐক্য আর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বদ্ধপরিকর।
স্থানীয় সাধারণ জনগণের ভাষ্য মতে, এখনও পর্যন্ত হাবিব হাসান বা তার সমর্থকদের কারো দ্বারা স্থানীয় কোনো পর্যায়ে জনভোগান্তির কোনো রেকর্ড নেই। সে হিসেবে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীই নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ। তারা বলছেন, বড় নেতা বা জনপ্রতিনিধিরা মূলত মানুষের ভোগান্তির কারণ হয় না। সাধারণ মানুষকে ভোগায় তাদের অনুসারী আর নামধারীরা।
নির্বাচীত হলে হাবিব হাসান যেন ক্ষমতার দাপট ও প্রভাব সৃষ্টিকারী এমন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন এবং দলীয় নেতার চেয়ে জননেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণে সচেষ্ট হন সেটাই তাদের আশা। অনেকের বক্তব্য, খুব কম নেতাই এখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চর্চা করে। হাবিব হাসান দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে প্রমাণিত মুজিব সেনা একথা সবাই জানে। আর তার নেতৃত্বে যেন বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত রাজনৈতিক ও জনসেবার দর্শন চর্চিত হয়। তাহলে দেশ ও দল দুটোই লাভবান হবে। একজন শেখ হাসিনা লড়াই করলে হবে না, তার অনুসারী ও নিবেদিত যোদ্ধাও দরকার৷ যার সংখ্যা এখন খুবই কম।
আসনটিতে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ভোটযুদ্ধে নামবেন তরুণ বিএনপি নেতা এসএম জাহাঙ্গীর।
আগামী ১২ নভেম্বর আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তফসিল অনুযায়ী ঢাকা-১৮ ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মো. নাসিমের সিরাজগঞ্জ-১ এ দুই আসনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ১৩ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৫ অক্টোবর, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ২২ অক্টোবর। দুই আসনেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হবে।