• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২১, ০৫:৪৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৯, ২০২১, ০৫:৪৬ পিএম

জাগরণ স্টুডিয়ো

সাংবাদিকতায় নারী: বড় চ্যালেঞ্জ সময় সমন্বয়

সাংবাদিকতায় নারী: বড় চ্যালেঞ্জ সময় সমন্বয়

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নানা প্রতিবন্ধকতাকে সহ্য করেই নানা ধরনের পেশায় টিকে থাকতে হয় নারীদের। অন্য অনেক পেশার ভেতর সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। সাংবাদিকতার মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীদের চ্যালেঞ্জ বহুমাত্রিক। তবে ঘর ও অফিস দুই জায়গা সামলে চলাটাই নারী সাংবাদিকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ মনে করেন বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকরা।

গতকাল সোমবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, জাগরণ অনলাইন আয়োজন করে “হোক­ জাগরণে”র বিশেষ পর্ব। “সাংবাদিকতায় নারী” শিরোনামে অনুষ্ঠানটি জাগরণের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হয় সন্ধ্যা ৬টায়। সেখানে সরাসরি যুক্ত হন ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের বিজনেসর প্রোগ্রামের প্রধান উম্মন নাহার আজমি, একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কাবেরী মৈত্রেয় এবং দি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি দৌলত আকতার মালা। উপস্থাপনায় ছিলেন সানজিদা আক্তার শম্পা।

নারী সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাবেরী মৈত্রেয় বলেন, “সাংবাদিকতায় চ্যালেঞ্জ যেটি সেটি হচ্ছে, আমাদের মতো মেয়েদের, যারা আমরা ঘর ও বাইরে দুটোই সামলাচ্ছি, তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সময় সমন্বয় করা। আমরা যারা রিপোর্টিংয়ে আছি, তাদের বাইরে কাজ করাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। একই সাথে অর্থনীতির বিষয় নিয়ে রিপোর্টিং করার কারণে প্রচুর পড়াশোনা এবং সোর্স থেকে তথ্য সংগ্রহ করা ও সোর্সের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই সাথে বাংলাদেশের বাস্তবতায় যেখানে খুব কম সংখ্যক নারী সাংবাদিতায় আসছেন সেখানে অফিসের পরিবেশটা একটা বড় ব্যাপার।”

ঘরে ও বাইরে কাজ ও সময় সমন্বয় নিয়ে উম্মন নাহার আজমি বলেন, “সাংবাদিকতায় আমরা কম সময় দিচ্ছি ব্যাপারটা তা না, তবে হ্যাঁ গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে অন্য পেশার চেয়ে আমি হয়তো সময়টা ম্যানেজ করে পরিবারকে সময় দিতে পারছি। এইদিক থেকে এটা গণমাধ্যমের সুবিধাই বলবো। আর চ্যালেঞ্জের কথা যদি বলতে হয় তাহলে অন্য পেশার থেকে এই পেশার চ্যালেঞ্জটা একটু বেশিই বলবো। তবে সময় পাল্টে গেছে অনেক। এখন অনেক পুরুষ সহকর্মী আমাদের অনেক সহায়তা করছেন। ব্যতিক্রম তো রয়েছেই। অনেক সময় অনেক অভিযোগ আমরা শুনি, যে পরিমাণ সহায়তা পাওয়ার কথা সে পরিমাণ পাচ্ছেন না নারীরা। অসঙ্গতি আছে। গণমাধ্যম এখনো এতো কর্পোরেট হয়ে উঠেনি। তবে আমি যদি আমার প্রতিষ্ঠানের কথা বলি, তাহলে অনেক সহায়তা এবং পরিবেশগত সুযোগসুবিধা আমরা পাচ্ছি।”

নারীদের সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ধ্যান ধারণা প্রসঙ্গে দৌলত আকতার মালা বলেন, “সাংবাদিকতায় অফিস আওয়ার বলতে কিছু নেই। ২৪ ঘণ্টা আমদের সার্ভিস দিতে হয় যেখানেই থাকি না কেন। তবে কিছু ফ্লেক্সিবিলিটি আছে। সাংবাদিকতায় দক্ষতা উন্নয়ন করে যেতে হয়। মেয়েদের সম্পর্কে যে ধারণাটি রয়েছে মেয়েরা এই পেশায় কম আসছে বিষয়টা তা নয়। আসলে আমদের মেয়েদের সবক্ষেত্রে প্রমাণ করে যেতে হয় যে আমরা পারি, যেটা ছেলেদের ক্ষেত্রে হয় না। এখন মেয়েরা মোটামুটি ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে আসছে কিন্তু প্রেস মিডিয়ায় তেমন লক্ষ্য করা যায় না। এই পেশায় মেয়েদের কমতি তার একটা বড় কারণ হচ্ছে আমাদের সমাজ সাংবাদিকতার মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় মেয়েরা যে আসতে পারে, সেটা এখনো অনেকে গ্রহণ করতে পারিনি আমরা। আমরা বলবো না যে আমাদের ফেবার করুক, কিন্তু আমদের যে সক্ষমতা আছে তা স্বীকৃতি দেবার প্রয়োজন আছে।”

সাংবাদিকতা পেশায় নারীদের অবস্থান নিয়ে আলাপের পাশাপাশি আলোচকগণ আশা প্রকাশ করেন, নারীরা সকল বাধা পেড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। সকল চ্যালেঞ্জিং পেশায় নিজেদের অবস্থান জানান দেবে নারীরা। আর এভাবেই ভবিষ্যত প্রজন্মের নারীদের জন্য পথ সুগম হবে।