মেয়েদের হয়ে মুখ খুললেন রাফিয়াত রাশিদ মিথিলা। তিনি একের পর বলে গেলেন কয়েকটি প্রচলিত কথা। যে কথা আজও সব অর্থে মেয়েদের ক্ষেত্রে সত্যি।
‘মেয়েদের মানিয়ে নিতেই হয়’। কিংবা ‘রাত করে বাড়ি ফিরলে তো মার খাবেই!’ অথবা ‘স্বামীর রাগই তো ভালবাসা।‘ ‘কী, গায়ে হাত তোলে? একটা থাপ্পড়ে কী হয়! টাকা-পয়সা তো দেয়।’ ‘মেয়েদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়’, ‘বাসর রাতে বিড়াল মারো’, ‘লাল শাড়িতে যাবে সাদা শাড়িতে আসবে’। এমন আরো কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
মিথিলা বোঝাতে চেয়েছেন ওই কথাগুলো যেন মেয়েদের জীবনগাথা। শহর থেকে শহরতলি হয়ে দেশ বা বিদেশ, এ কথা গুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মেয়েদের শেখানো হয়। একুশ শতকেও তার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বরং জন্ম থেকে শুনতে শুনতে কথাগুলো যেন ‘অভ্যেস’ হয়ে দাঁড়িয়েছে নারী জীবনে। হাজার নিয়ম, নীতির বেড়াজালে বন্দি নারী যখনই ছটফটিয়ে উঠে নতুন কিছু শুনতে চায় এই কথাগুলো যেন আরো বেশি করে শোনানো হয় তাকে। যাতে নিয়ম-বিরুদ্ধ, নীতি-বিরুদ্ধ কোনো কাজ, কোনো পদক্ষেপ সে না নিয়ে ফেলে।
স্বামী বা পুরুষ সঙ্গীর রাগ বড্ড বেশি, তাই সে রেগে গিয়ে হাত তোলে। তাই স্ত্রীকে বা সেই মেয়েকেই সাবধানে থাকতে হবে, সেই পুরুষ যাতে রেগে না যান। এই সমীকরণে অভ্যস্থ হয়েও সমাজে গার্হস্থ্য হিংসা কি কমেছে? বরং উল্টোটাই হচ্ছে। কারণ, শুধু সমাজ বা পুরুষ নয়, পিতৃতন্ত্রের দাপটে এই কথাগুলো এক নারী অবলীলায় আর এক নারীকেই বলতে থাকে।
একুশ শতকেও কি এই ধারা বদলাবে না? অবশ্যই বদলাবে। তারই ডাক দিয়েছেন মিথিলা। যুগ যুগ ধরে বলে আসা কথাগুলোর সঙ্গেই ছিল তার জোরাল প্রতিবাদ।
তার দাবি, এই সব কথা আমাদের সমাজে পারিবারিক নির্যাতনকে আরো যেন স্বাভাবিক করে তুলছে। আমি এই ধরনের সমস্ত কথা বর্জন করছি। একইভাবে তিনি সমস্ত মেয়ে এবং সমাজের সবাইকে গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন।
মিথিলার এই প্রতিবাদী রূপ নতুন নয়। এর আগেও তিনি নারী-শিশু পাচার এবং ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টুইটারে অশ্লীল কটাক্ষের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এমইউ