বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির প্রভাবে কয়েক দিন ধরেই উত্তাল সাগর। জোয়ারের ধাক্কায় কক্সবাজার সৈকতের হাল হচ্ছে সেন্টমার্টিনেও।
গত চার দিনের তাণ্ডবে সেন্টমার্টিনের পূর্ব-উত্তর ও পশ্চিম পাশের প্রায় দুই কিলোমিটার সৈকত ভেঙে গেছে। তাতে ঝুঁকিতে পড়েছে বিপুল সংখ্যক হোটেল মোটেল, মানুষের ঘরবাড়ি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গত ৯ দিনে বঙ্গোপসাগরে দুইবার নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে সাগরও উত্তাল হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের মধ্যে ভাসমান দ্বীপ হওয়ায় জোয়ারের তান্ডবে দ্বীপের পূর্ব-উত্তর, পশ্চিম দিকে আঘাত হানছে বেশি। ইতিমধ্যে দেড়-দুই কিলোমিটার সৈকত ভেঙে গেছে। উপড়ে পড়েছে অর্ধশতাধিক নারকেল গাছ। বর্ষার আগে জরুরি ভিত্তিতে পাথরের সিসিব্লক দিয়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে ৬০টি হোটেল মোটেল, ৪০০টি বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এখন জোয়ারের পানিতে কয়েকটি হোটেল, বেশকিছু বসতবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও হোটেল মালিকেরা জানান, সাগরের তাণ্ডব থেকে সম্পদ রক্ষার জন্য বালুভর্তি জিও টিউব ও বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু জোয়ারের ধাক্কায় তাও ভেঙে যাচ্ছে। বর্ষায় সমুদ্রের তাণ্ডব বেড়ে গেলে অথবা ঘূর্ণিঝড়-জ্বলোচ্ছাস আঘাত হানলে জিও টিউব বাঁধ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তখন হোটেল-রেস্তোরাসহ দ্বীপের বিপুল অংশ সাগরগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। বর্তমানে সেন্টমার্টিনে নির্মাণ করা হয়েছে ১২৬টি হোটেল-কটেজ।
স্থানীয় হোটেল মালিকেরা বলেন, গত সাত-আট বছরে সমুদ্রের জোয়ারের এমন তাণ্ডব দেখা যায়নি। কিন্তু গত বছর থেকে সমুদ্রের জোয়ারের উচ্চতা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের পানির উচ্চতা দ্রুত বাড়ছে।
পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা আবদুল নবী জানান, সাগরের তাণ্ডবে দ্বীপের ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। আমরা সরকারের কাছে ত্রাণ চাই না, স্থায়ী একটা বেড়িবাঁধ চাই।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট দুই দফার নিম্নচাপের প্রভাবে আট-নয়দিন ধরে সাগর উত্তাল রয়েছে, তাতে সেন্টমার্টিন সৈকতসহ হোটেল মোটেলের সীমানা বিলীন হলেও পাউবোর এক্ষেত্রে করার কিছু নাই।
নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, আগে সেন্টমার্টিনে বেড়িবাঁধ নির্মানের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বেড়িবাঁধ নির্মান নিয়ে নানা জনে নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে। একারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ নির্মানের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জাগরণ/দুর্যোগ/এস