ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী আইসিইউতে ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। রোববার (২৮ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পুরাতন ভবনের সভাকক্ষে মহাপরিচালক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ডেঙ্গু বিষয়ক জরুরি অবহিতকরণ সভায় মহাপরিচালক বলেন, আইসিউতে থাকা ২৮ জনের মধ্যে ১২ জন ঢাকা শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে।
ডেঙ্গুজ্বরের ঝুঁকিতে পুরো ঢাকা শহর উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গুর পরিস্থিতি জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত একটি জরিপের ডাটা সংগ্রহের কাজ আমরা গতকাল (২৭ জুলাই) শেষ করেছি। সব কাজ শেষ হওয়ার পরে আমরা এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে জানাতে পারব। তবে এখন পুরো ঢাকা শহরই ঝুঁকিপূর্ণ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরে মহাপরিচালক জানান, প্রতিটি হাসপাতালে একটা করে হেল্প ডেস্ক বসবে। ডেঙ্গু আক্রন্তরা এই হেল্প ডেস্কে গিয়ে যেকোনও তথ্য নিতে পারবেন। এছাড়াও হাসপাতালগুলো মনিটর করার জন্য দশটি মনিটরিং টিম করা হবে, প্রতি টিমে তিন সদস্য করে থাকবেন, যারা ডেঙ্গুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনিটর করবে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরকে অবহিত করবে।
তিনি আরও বলেন, সেবার ব্যাপারে কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। কোনও ছাড় দেওয়া চলবে না।’ সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের মালিক সমিতিও এসব ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।
সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা দেখছি চিকিৎসার বিষয়টি। এক্ষেত্রে আমরা সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের কষ্ট একটু বেড়েছে। কিন্তু আমরা বসে নেই।
ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে তথ্য বিভ্রাটের বিষয়ে মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কয়েকজন সাংবাদিক। অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালের প্রতি নির্দেশনা দেয়া আছে। আমরা তদারকিও করছি যাতে পূর্ণাঙ্গ তথ্য আসে। কিন্তু তাতেও পারা যাচ্ছে না। তারপরও যতটা হাসপাতালের তথ্য আমরা পাচ্ছি, তা দিয়ে অন্ততঃ বাস্তবতার একটা চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। যা ডেঙ্গু মোকবিলায় আমাদের উপকারে আসবে। আর মৃত্যু ডেঙ্গুর প্রভাবেই হয়েছে কি-না, তা নিশ্চিত হতে আমাদের আইইডিসিআরের ল্যাবে টেস্ট করা হয়, তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের খাতায় লিপিবদ্ধ হয়। কিছু মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে এখনও পরীক্ষা শেষ হয়নি বলে জানান মহাপরিচালক।
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হবার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফিরোজ কবিরের মৃত্যু ও তার চিকিৎসা ব্যয়ে স্কয়ার হাসপাতালের প্রস্তুত করা মোটা অংকের বিলের বিষয়েও সাংবাদিকরা মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জানতে চাওয়া হয়- ডেঙ্গুর চিকিৎসায় এতো অল্প সময়ে কিভাবে এতো বিল হয়, এমন বিল প্রস্তুত করা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে কিনা, স্কয়ারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি-না।
উত্তরে অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। অবশ্যই এটা দেখা হবে।
ডেঙ্গু নিয়ে এখন থেকে প্রতিদিন সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, প্রতিটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রধানরাও আমাকে জানিয়েছেন, তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতামূলক সভা করবে। এছাড়া আরও বহু ধরণের পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
আরএম/বিএস