কোভিড-১৯ এর সংক্রমণে বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত তখন আশার কথা শোনাচ্ছে স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেডআর্কাইভ।
যুক্তরাষ্ট্রের ৬ বিজ্ঞানীর গবেষণা বলছে, যেসব দেশে বিসিজি টিকা কর্মসূচি আছে সেখানে সংক্রমণের ভয়াবহতা কম। এর ফলে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ।
বাহুতে বিসিজি বা ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন টিকার দাগই এখন হতে পারে স্বস্তির কারণ। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের শরীরে রয়েছে এই টিকার দাগ, যা যক্ষার প্রতিষেধক হিসেবে শৈশবে দেয়া হয়েছিল।
স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেডআর্কাইভ ২৪ মার্চ (মঙ্গলবার) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৬ বিজ্ঞানীর অনুসন্ধান বলছে, যেসব দেশের জাতীয় নীতিতে দীর্ঘদিন ধরে বিসিজি টিকা কর্মসূচি রয়েছে সেখানে ভয়াবহ হয়নি কোভিড সংক্রমণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিডে হিমশিম খাওয়া যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেন, বেলজিয়ামে জাতীয়ভাবে বিসিজি টিকা কর্মসূচি নেই।
অন্যদিকে ইরানে যক্ষার ভ্যাকসিনটি সর্বজনীন করা হয় অনেক পরে, ১৯৮৪ সালে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতেও মৃত্যুহার অনেক বেশি। তবে ইরানে বয়স্কদের মধ্যে যারা বিসিজি টিকা নিয়েছেন, তারা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে পারছেন এবং মৃত্যু হারও কম।
জাপানে ১৯৪৭ সালে বিসিজি টিকা সর্বজনীন করা হয়। সেজন্য ইরানে কোভিডে মৃত্যু হার যখন ১৯ দশমিক ৭, জাপানে তখন শূন্য দশমিক ২৮। আবার ব্রাজিলে ভ্যাকসিনটি ১৯২০ সাল থেকেই সর্বজনীন। সেখানে মৃত্যুহার ০.০৫৭৩।
যক্ষ্মার প্রতিষেধক হিসেবে বাংলাদেশে বিসিজি টিকা কর্মসূচি স্বাধীনতারও অনেক আগে থেকে। ১৯৭৯ সাল থেকে নবজাতকে বিসিজি বা ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন টিকা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।
সারা দেশে এখন প্রায় ৯৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ মানুষের শরীরে এই টিকা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমএনসি অ্যান্ড এইচ-এর পরিচালক শামছুল হক।
মেডআর্কাইভের গবেষণাটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গবেষণাটি স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এসএমএম