• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২০, ০৯:৫৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৬, ২০২০, ০৯:৫৮ পিএম

কোভিড-১৯

রোগীর চিকিৎসা দুর্লভ, স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ১২৫

রোগীর চিকিৎসা দুর্লভ, স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ১২৫
সংগৃহীত ছবি (ডয়েচেভেলে)

করোনায় দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সব খাতই বলতে গেলে বিপর্যস্ত৷ করোনার চিকিৎসা সহজ নয় আর সেই সঙ্গে ভেঙে পড়েছে অন্য রোগবালাইয়ের চিকিৎসাও৷ কষ্টে আছে বিভিন্ন খাতের শ্রমিক, কম আয়ের জনগণ৷

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনার চিকিৎসার সঠিক ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা কাজে নিয়োজিতদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা এখনও নিশ্চিত হয়নি৷ বিষয়ে সঠিক কোনও গাইডলাইন নেই৷

তারা আরও বলেন, চিকিৎসকরাই এখন করোনা হুমকির মুখে আছেন৷ তারা যদি রক্ষা না পান তাহলে চিকিৎসা চলবে কিভাবে?

করোনার চিকিৎসা কোথায় হয়

করোনার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ৬টি হাসপাতালের কথা বলা হলেও বাস্তবে প্রস্তুত মাত্র দুইটি৷ বাকিগুলোতে শুধু এখন পর্যন্ত টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আর ঢাকার বাইরে কয়েকটি হাসপাতালে টেস্টের ব্যবস্থা আছে৷

ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷ কিন্তু সেখানে করোনার কোনও চিকিৎসা এখনও শুরু হয়নি৷ ওই হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, পুরোপুরি করোনা হাসাপাতাল করতে আরও সময় লাগবে৷ আমরা ফ্লু কর্নার করেছি৷ টেস্ট করে করোনা পজিটিভ পেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল বা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই৷

তার মতে, যে হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হবে সেখানে অন্য কোনও রোগের চিকিৎসা করা ঠিক নয়৷ 

ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনার বেড আছে ২২টি, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ২৬টি, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে ৮টি, সাজিদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ৫টি, মিরপুর ও উত্তরা রিজেন্ট হাসপাতালে আছে ৬টি আইসিইউ করোনা বেড৷ ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে কেবল ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬টি, খুলনার ডায়াবেটিক হাসপাতালে আছে ৫টি আইসিইউ বেড৷ 

কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের নার্সদের খাদ্য সঙ্কট চলছিল কয়েকদিন ধরে৷ তাদের ৯৯ জন নার্সের মধ্যে ৭০ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে একটি হোটেলে৷

হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলিমুজ্জামান জানান, হোটেল কর্তৃপক্ষ বিল না পেয়ে খাবার নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করেছিল৷ এখন আমরা বিল দিয়ে দেয়ায় খাবার সঙ্কট হচ্ছে না৷ 

ঢাকায় স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতদের থাকার জন্য আরও কতগুলো হোটেল তালিকাভুক্ত করা হলেও তারা এখনো সেবা দেয়া শুরু করেননি৷

টেস্ট এখনও জটিল

করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হলে টেস্ট এখনও জটিল ও কঠিন৷ ১৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) করোনা পজিটিভ হওয়া এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, তিনি পাঁচ দিন চেষ্টার পর করোনা টেস্ট করাতে সক্ষম হয়েছেন৷ ওই পাঁচ দিন তিনি আইইডিসিআর ও বিএসএমইউতে দফায় দফায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন৷ এখন করোনা পজিটিভ হওয়ার পর বাসায়ই আছেন আইসোলেশনে৷ স্বাস্থ্য অধিদফতর তাকে একটি টেলিফোন মেসেজ দিয়ে আলাদা থাকতে বলেছে৷

তিনি বলেন, পুলিশ যোগাযোগ করছে৷ কিন্তু আমার চিকিৎসা কোথায় হবে আমি জানি না৷

এখন ঢাকায় ৯টি ও ঢাকার বাইরে ৬টি করোনা টেস্ট সেন্টার আছে বলে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে৷

চিকিৎসায় নিয়োজিতদের নিরাপত্তা

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, আসলে ঢাকা ছাড়া জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে করোনার চিকিৎসা নাই৷ এটা করা সম্ভবও নয়৷

তিনি বলেন, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতদের পিপিইর নামে যা দেয়া হচ্ছে তা মানসম্মত নয়৷ নকলও আছে৷ এই কারণে ডাক্তার ও নার্সদের মধ্যে এখন ১২৫ জন করোনা পজিটিভ৷ ডাক্তার আছেন ৬৩ জন৷ আমার বিবেচনায় এখন পর্যন্ত ১০ ভাগের বেশি স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি৷

নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও বিষয়টি তুলে ধরছেন৷ এরইমধ্যে নকল পিপিই নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে৷

ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, এখনও করোনা চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে সঠিক গাইড লাইন নাই৷ ফলে সাধারণ চিকিৎসাও বিপর্যস্ত৷ ডয়েচেভেলে।

এসএমএম 

আরও পড়ুন