• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২০, ০২:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০২০, ০২:০৮ পিএম

কোভিড-১৯

আক্রান্তের ৭ম সপ্তাহে নতুন শনাক্ত ৩১২, মৃত্যু ৭

আক্রান্তের ৭ম সপ্তাহে নতুন শনাক্ত ৩১২, মৃত্যু ৭
অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ● আইইডিসিআর এর ওয়েবসাইট

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩১২ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের।শনিবারের (১৮ এপ্রিল) তুলনায় গত ২৪  ঘণ্টায় ৬ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৬ জনে। মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১ জনে। শনিবার মারা যাওয়ার সংখ্যা ছিল ৯ জন।

রোববার (১৯ এপ্রিল) কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক। এ সময় অতিরিক্ত মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য অধিদফতর) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৪৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ৬৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এতদসংক্রান্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ পুরুষ ও ৩৪ শতাংশ নারী। তাদের ঢাকার ভেতরে ৪৪ শতাংশ, নারায়ণগঞ্জে ৩১ শতাংশ এবং বাকি ২৫ শতাংশ সারা দেশে।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৪ শতাংশের বয়স ৩০-৪০ বছর ও ২২ দশমিক ৩ শতাংশের বয়স ২০-৩০ এর মধ্যে।

যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৫ জন পুরুষ এবং দুই জন নারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ভেতরে তিন জন এবং বাকি চার জন নারায়ণগঞ্চে মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আরও ৯ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রয়েছে ৫২ জন। এ নিয়ে মোট আইসোলেশনে রয়েছেন ৬৪০ জন।

আইসোলেশন থেকে ২৫ জন ছাড়া পেয়েছেন। এ নিয়ে মোট ছাড়া পেলেন ৫৩৭ জন।

হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৮৯২ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৪৭৯ জন।

এই সময়ের মধ্যে হটলাইনে ৫৯ হাজার ৭২ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউন ঠিকভাবে কাজ করছে না। প্রতিদিনই আক্রান্তরা নতুন এলাকায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। যার কারণে কমিউনিটি সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমরা অন্যান্য দেশের তুলনায় ভাল আছি। আক্রান্তের ৭ম সপ্তাহে আছি আমরা। এমন সময়ে আমেরিকায় লাখ লাখ আক্রান্ত হয়েছিল সেখানে আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। আমরা ভাল থাকতে চাই। তাই করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫০টিতেই সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ঢাকা মহানগরীর ১১৫টি এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) ৩০৬ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয় এবং মারা যায় রেকর্ড সংখ্যক ৯ জন।

৮ মার্চ (রোববার) দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মাসের শেষ দিক থেকে দেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। এই সিদ্ধান্তের পরও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছেই। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার এরই মধ্যে নানা পদক্ষেপও নিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ছুটিতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যাতে না হয় সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। দেশের বিভিন্নস্থানে ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছে সরকার। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে চলাচলের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই সেই আহ্বান শুনছেন না সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রাস্তায় বেরনো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিছুক্ষেত্রে কঠোরও হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এরমধ্যেও  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক জানাজায় জড়ো হয় লাখো মানুষ। এ মুহূর্তে এ ধরনের জমায়েত বড়ই বিপজ্জনক। আশঙ্কা করছি এ কারণে কোভিড আক্রান্ত আরও বেড়ে যাবে।

এ ঘটনার পর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর মধ্যেই প্রত্যাহার করা হয় সংশ্লিষ্ট থানার ওসি (তদন্ত) ও সার্কেল এএসপিকে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও করা হচ্ছে।

তবে আদেশ অমান্যের ঘটনা যে শুধু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেই ঘটছে এমনটি নয়। গণপরিবহন বন্ধ থাকার নির্দেশনা দেয়া সত্ত্বেও চাঁদপুর ও সিলেটে দুইটি ট্রেন চলেছে।

করোনায় আক্রান্ত ছাড়াল ২৩ লাখ, মৃত ১ লাখ ৬০ হাজার এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বের ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৪৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৫৭ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৬৪২ জন।

বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৪৬ জন। তাদের মধ্যে ১৫ লাখ ১৮ হাজার ২৮১ জনের শরীরে রয়েছে মৃদু সংক্রমণ। অন্যদিকে ৫৫ হাজার ২৬৫ জনের অবস্থা গুরুতর।

যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩০ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। সেখানে মারা গেছেন ৩৯ হাজার ১৪ জন।

এসএমএম

আরও পড়ুন