আক্রান্তের ৫৯তম দিন
........
গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে ৭৮৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত একদিনে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হওয়া রোগী। যা সোমবারের (৪ মে) তুলনায় ৯৮ জন বেশি। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ হাজার ৯২৯ জনে।
একই সময়ে মারা গেছে আরও ১ জন। মৃত ব্যক্তি পুরুষ এবং তার বয়স ২১ থেকে ৩০ এর মধ্যে। সোমবার মারা যাওয়ার সংখ্যা ছিল ৫ জন। সব মিলিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্য ১৮৩ জন।
নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১৯৩ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪০৩ জন।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় টানা ৮ দিন ধরে দেশে পাঁচশোর বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল ৫৪৯, ২৯ এপ্রিল ৬৪১, ৩০ এপ্রিল ৫৬৪, ১ মে ৫৭১, ২ মে ৫৫২, ৩ মে ৬৬৫, ৪ মে ৬৮৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।
মঙ্গলবার (৫ মে) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১টি কেন্দ্র থেকে মোট ৬ হাজার ১৮২ টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এখান থেকে ৫ হাজার ৭১১ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৭ হাজার ৬৯৪টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনের নেয়া হয়েছে ১২৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনের আছেন ১ হাজার ৬৯৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭০ জন, এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ২৪৩ জন।
যারা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ এবং স্বাভাবিক। তারা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ থাকবে, তারা যেন এখনও নিজ ঘরে থাকেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) ব্রিফিংয়ে ডা. নাসিমা জানান, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যধি হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল (উত্তরা), রিজেন্ট হাসপাতাল (মিরপুর), সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, রাজারবাগ হাসপাতাল ও লালকুঠি হাসপাতালে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশের ৬৩টি জেলায় করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে।
শুধু রাঙামাটি জেলাতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগীর সন্ধান মেলেনি।
রোববার (৩ মে) ৬৮৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা বলা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে। সেই সঙ্গে আরও ৫ জনের মৃত্যুর খবর দেয়া হয়।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে।ষষ্ঠ দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয়েছে ১৬ মে পর্যন্ত।
বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ৪০৭ জনে। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার ১৭০ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৫৯ জন।
২৪ ঘণ্টায় করোনায় বিশ্বে মৃতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩০০ এরও বেশি। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়েছে। মারা গেছেন ৬৯ হাজার ৯২১ জন।
ফ্রান্সে নতুন করে ৩০৬ জনসহ প্রাণহানি ২৫ হাজার। যুক্তরাজ্যে আরও ২৮৮ জন, স্পেনে ১৬৪ জন ও কানাডায় ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইতালিতে একদিনে মারা গেছেন ১৯৫ জন। দেশটিতে সর্বমোট প্রাণহানি ছাড়ালো ২৯ হাজার।
রাশিয়ায় দ্বিতীয় দিনেও করোনায় আক্রান্ত ১০ হাজারের বেশি। এ পর্যন্ত আক্রান্ত এক লাখ ৪৫ হাজার।
পর্তুগালে করোনায় এক প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় ভারতে একদিনে ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট প্রাণহানি দেড় হাজার ছাড়ালো। এই তথ্য দিয়েছে ওয়ার্ল্ডোমিটার। যদিও ভারতের সরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ১৩৮৯ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। এরপর একে একে বিশ্বের ২১০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।
এসএমএম