• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৫, ২০২০, ০৪:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৫, ২০২০, ০৪:২২ পিএম

কোভিড-১৯

ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার হৃৎরোগের অন্যতম প্রধান কারণ হওয়ায়, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের সময় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে করোনাভাইরাসে সেলফ-কোয়েরেন্টাইন এবং আইসলেশনে থাকার সময় ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাদ্য পরিহারের পরামর্শ দেন তারা।

ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাদ্যদ্রব্য যেমন- প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড, স্ন্যাক্স ফুড, ভাজাপোড়া খাবার, বিস্কুট, কুকিজ, মার্জারিন এগুলোতে ট্রান্স ফ্যাট থাকে।

ট্রান্সফ্যাট এক প্রকার হাইড্রোজেনেটেড অয়েল। এই আংশিক হাইড্রোজেনেটেড তেলই শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস, যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামেও পরিচিত।

খাদ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো খাবার সংরক্ষণের সুবিধার্থে এবং বিভিন্ন ভাজা পোড়া ও বেকারি খাদ্য পণ্যের স্বাদ, ঘ্রাণ এবং স্থায়ীত্ব বাড়ানোর জন্য আংশিক হাইড্রোজেনেটেড তেল ব্যবহার করে থাকে। ভাজা পোড়া খাদ্যে একই ভোজ্য তেল উচ্চ তাপমাত্রায় বারবার ব্যবহারের কারণেও খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট সৃষ্টি হয়।

সাধারণত খরচ কমানোর জন্য হোটেল-রেঁস্তোরায় সিঙ্গারা, সমুচা, পুরি, জিলাপি, চিকেন ফ্রাইসহ বিভিন্ন ধরনের ভাজা পোড়া খাবার তৈরির সময় একই তেল বারবার ব্যবহার করা হয়। এ কারণে এসব খাবারে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, হৃৎরোগীরা করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝূঁকিতে থাকেন। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃৎরোগে মারা যায়, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবারের কারণে স্ট্রোক এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, লকডাউনের কারণে ঘরে বন্দী থাকায় মানুষের শারীরিক কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমেছে। তাই রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন তারা।

এর আগে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) দেশে প্রচলিত ফাস্টফুড, বেকারিপণ্য, স্ট্রিট ফুড কিংবা রেস্তোরায় তৈরিকৃত ভাজা-পোড়া খাদ্যপণ্য তৈরিতে হাইড্রোজেনেটেড তেলের ব্যবহার কমাতে এবং ভোজ্যতেল বারবার ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

বিএসটিআই’র সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে মানুষ এখন ঘরে অবস্থান করছে এবং অধিকাংশের শারীরিক কর্মকাণ্ড  অনেকটাই কমে গেছে, তাই সুস্থ থাকতে ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণে ইতোমধ্যে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট অ্যাসিড নির্মূল ক্রমেই বিশ্বজুড়ে একটি অগ্রাাধিকার হয়ে উঠছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটমুক্ত বিশ্ব অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

ভারত, থাইল্যান্ড, ইরান, অস্ট্রিয়া, নরওয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলসহ মোট ৩০টি দেশে খাদ্য দ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ কার্যকর করেছে। আরও ২৪টি দেশ ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)-র সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, বিএফএসএ ট্রান্স ফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে একটি নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু করেছে।

ভোজ্যতেল এবং অন্যান্য খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা কমিয়ে আনতে একটি ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং উক্ত কমিটি এরই মধ্যে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, বিশেষজ্ঞ এবং ভোক্তাদের সাথে দুটি আলোচনা সভা সম্পন্ন করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড মেনে শিগগিরই এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এসএমএম

আরও পড়ুন