সব খাদ্যে ক্যালরি সমান থাকে না। বিভিন্ন খাদ্য শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় পথের মধ্য দিয়ে যায়। শরীরের ওজন কমানোর প্রথম শর্ত হচ্ছে সঠিক খাবার খাওয়া।
অতিরিক্ত অপুষ্টিকর ও কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেয়ে পরিশ্রম করলেও কোনো কাজে আসবে না। ওজন কমাতে এবং শরীর সুস্থ রাখতে অনুসরণ করা প্রয়োজন সুষম ও নিয়ন্ত্রিত খাবার তালিকা ।
জেনে নেই সে খাবারগুলো, যা আপনাকে সুস্থ রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
একটি পুরো ডিম
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ভরপুর প্রোটিন মেলে ডিম থেকে। এতে কোলেস্টেরল থাকলেও সেটা বেশি না। ভিটামিন বি-২, ডি, ফসফেট, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো আরো কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরের জন্য খুবই ভালো।
সম্প্রতি ৩০ জন অতিরিক্ত ওজনের মহিলার ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাস্তায় একটি পুরো ডিম খাওয়ার কারণে সারাদিনের খাবারের চাহিদা কমে যায়। এতে পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টা তারা কম খাবার খায়।
সবুজ সবজি
ওজন কমানোর খাদ্যতালিকায় শাকসবজিকে প্রাধান্য দেন পুষ্টিবিদরা। ক্যালরির পরিমাণ না বাড়িয়ে শাক-সবজি থেকে পূর্ণ পুষ্টি নেয়ার হতে পারে দুর্দান্ত উপায়। হালকা শাকগুলো অবিশ্বাস্যরূপে পুষ্টি দেয়। ক্যালসিয়ামসহ অনেক ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং খনিজের পরিমান থাকে খুব বেশি। যা অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে।
তিসিবীজ
তিসিবীজ ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ চা চামচ করে তিসিবীজ খেলে একমাসে অনেকটা ওজন কমানো সম্ভব। তিসিবীজে আছে ফ্যাটি এসিড এবং প্রচুর খাদ্য আঁশ, যা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে এবং শরীর ভালো রাখে।
আপেল ও তরমুজ
আপেল ও তরমুজ ওজন কমানোর সাথে দেহকে শক্তি প্রদান করে। তরমুজে ৯২% পানি রয়েছে। এটিতে থাকা লাইকোপিন প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমায়। অন্যদিকে আপেল হচ্ছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। এই উপাদাগুলো শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আদা
আদা শরীরের জন্য বেশ উপকারি। আদা পানি মূলত হজমের সমস্যা দূর করে। এছাড়া অতিরিক্ত ক্যালরি নষ্ট, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি ও পেশি সচল রাখতে সাহায্য করে।
লেবু
প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় একটি লেবু থাকলে আপনার ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে। লেবুর মধ্যে আছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা শরীরের বাড়তি চর্বি এবং কলেস্টেরল দূর করে। গরম পানির সাথে লেবু আর মধু মিশিয়ে খেলে একদিকে যেমন ঠান্ডা থেকে মুক্তি পাবেন, অন্যদিকে এটার টক্সিন চর্বি দূর করবে।
টুনা মাছ
টুনা মাছে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন ও কম পরিমানে ক্যালোরি। টুনা মাছে চর্বির পরিমাণ খবুই কম। যারা শরীরকে ফিট রাখতে চান তারা খাদ্যতালিকায় রাখুন এই মাছ। এছাড়া উচ্চরক্ত চাপ , ক্যান্সার ও হৃদপিন্ডের সুরক্ষায় টুনা মাছ গুরুত্বপূর্ণ।
বাদাম
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন বাদাম। এটি যেমন আপনাকে সুস্থ রাখবে অন্যদিকে আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করবে। চিনা বাদামে প্রচুর পরিমানে বায়োটিন থাকে এটি চর্বি কমাতে সাহায্য করে। একটি ডিম থেকে যতটা প্রোটিন পাওয়া যায় ঠিক তার সমপরিমান প্রোটিন পাওয়া যায় ৩০ গ্রাম পেস্তাবাদামে।
টক দই
টক দই হচ্ছে লাইকো প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার। এটি চর্বি কমাতে সাহায্য করে। টক দইয়ে চিনি না থাকায় এটি ওজন কমিয়ে থাকে। আর এটির ব্যাকটেরিয়াসমূহ দেহের পরিপাকতন্ত্রের কাজে সাহায্য করে।
নারকেল তেল
নারকেল তেলে রয়েছে ভিটামিন ই, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল। যা শরীরের ফ্যাট কমায়। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড হজম শক্তি বাড়ায়। রান্নায় অতিরিক্ত ভার্জিন নারকেল তেল ব্যবহার করা হয় ওজন কমাতে। নারকেল তেল দেহের হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। এটিতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে না, ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার ওজন ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ৩ মাসের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিলি গ্রাম ভিনেগার খেলে শরীরের ১.২- ১.৭ কেজি ওজন কমে।