অবশেষে ২৮ জন দালালের তালিকা প্রকাশ করেছে হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতাল। এর আগে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি দালাল নির্মূলের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও অজানা কারণে তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। ফলে ভুক্তভোগীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) তালিকা তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর.এম.ও) ডা. মিঠুন রায়। এ তালিকা হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, পুলিশ সুপার এবং সদর মডেল থানায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দালালদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিলেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিভিন্ন গ্রাম থেকে চিকিৎসার জন্য আসা সহজ-সরল মানুষগুলো দালালদের থপ্পরে পড়ে প্রতিদিনই প্রতারিত হচ্ছিলেন। দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক রোগীর প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকের পৃষ্টপোষকতায় সক্রিয় এ দালালগোষ্ঠী।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় দালাল নির্মূলে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওই কমিটির কার্যক্রম কাগজপত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে। অবশেষে ৩ মাস পর প্রকাশ করা হলো ২৮ দালালের তালিকা। উপ-কমিটির সভাপতি ডা. মিঠুন রায়সহ ৩ জনের স্বাক্ষরিত তালিকা অনুযায়ী দালালরা হল, সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামের ইউনুছ মিয়া, হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার সেলিম মিয়া, বানিয়াচং উপজেলার শাহিন মিয়া, একই উপজেলার কান্দিপাড়া গ্রামের অসিত দাশ, হবিগঞ্জ শহরের শংকরের মুখ এলাকার সজল দাশ, সদর উপজেলার হাতির থান গ্রামের নুরুল মিয়া, লাখাই উপজেলার বুলা গ্রামের সাদিকুন্নেছা, হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার ছায়া বেগম, ছোট বহুলা গ্রামের রেজিনা বেগম, ইনাতাবাদ এলাকার সিরাজ মিয়া, বড় বহুলা গ্রামের জাফর মিয়া, চুনারুঘাট উপজেলার মাসুক মিয়া, মির্জাপুর গ্রামের শাহিন মিয়া, অনন্তপুর আবাসিক এলাকার আব্দুস সালাম, একই এলাকার আব্দুল মালেক, বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের সেলিম মিয়া, অনন্তপুর এলাকার আব্দুল খালেক, অসিত, উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সুজন, একই গ্রামের চয়ন, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মাছুম, লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের হাছান, চুনারুঘাট উপজেলার রেহেনা, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার যাত্রাবড়বাড়ি এলাকার টেনু মিয়া, বানিয়াচংয়ের মিজান, চুনারুঘাটের মাসুক ও শহরের রাজনগর এলাকার দীন ইসলাম এবং লুকড়া গ্রামের খালেক মিয়া।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতীন্দ্র চন্দ্র দেব দৈনিক জাগরণকে জানান, তালিকাটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই হাসপাতাল দালালমুক্ত হবে।
প্রসঙ্গত, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, রোগীর শয্যা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সংকটের বিষয়টি চরম আকার ধারণ করেছে। এছাড়া হাসপাতালে অবিবেচক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, মাদকসেবী ও দালালদের দৌরাত্ব লাগামহীন হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি হাসপাতালের এ সব বিষয় নিয়ে ‘দৈনিক জাগরণে’ সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এএস/