অবশেষে সারা বিশ্বের আশঙ্কাকে সত্য করে ইরানের সাথে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে চলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে শেষ মুহূর্তে নিজেদের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে দেশটি। তা না হলে হয়তো ভোরের আলো ফোটার আগেই পৃথিবীর বুকে শুরু হয়ে যেত যুদ্ধের তাণ্ডবলীলা। আর এর পরিণতি কতটা বিভীষিকাময় হতো তা ভাবতেও যেন গা শিউরে ওঠছে বিশ্ববাসীর!
শুক্রবার (২১ জুন) এমনই এক চাঞ্চল্যকর খবরের তথ্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তোলপাড় শুরু হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম অঙ্গণে, স্তম্ভিত হয়ে পড়েন বিশ্ব নেতারা!
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রকাশিত এক সংবাদে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সম্প্রতি ইরান মিসাইল ছুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পর্যবেক্ষণকারী ড্রোন বিমান ভূপাতিত করেছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটির মূল ভূখণ্ডে আকাশ ও জল পথে একযোগে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ড্রোন ভূপাতিত করার জেরেই এই হামলার সিদ্ধান্ত নেয় পেন্টাগন।
খবরের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) এই বিষয়ে করণীয় স্থির করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ দেশটির উচ্চপদস্থ সামরিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ হোয়াইট হাউসে এক জরুরি বৈঠকে বসেন। সেখানে হামলা পরিচালনা সম্পৃক্ত নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলাপের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্মতিক্রমে ইরানে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সে রাতেই আকস্মিকভাবে হামলার সিদ্ধান্ত বাতিলের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
খবরে আরো জানা যায়, ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এই ড্রোন ভূপাতিত করার প্রতিশোধ নিতে প্রাথমকিভাবে ট্রাম্প ইরানের রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনাকারী পাওয়ার গ্রীড ইত্যাদির উপরে আক্রমণ করায় সম্মতি প্রদান করেন। মার্কিন সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সূত্রে খবরে বলা হয়, এদিন ভোরের ঠিক আগে আক্রমণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। যাতে ইরান সেনা ও সাধারণ মানুষের জীবনের ঝুঁকিকে যথা সম্ভব কম করা যায়।
সেনা সূত্রটির তথ্য অনুসারে রয়টার্স জানায়, পরিকল্পনা মত হামলার জন্য মার্কিন ক্যারিয়ারে রাখা যুদ্ধ বিমানের একটি দল এ সময় আকাশে উড্ডয়ণ করে। পাশাপাশি ইউএস মেরিনের একাধিক রণতরী থেকে ইরানের ভূখণ্ডে স্থাপিত বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালানোর সার্বিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে সেনারা।
তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে তাৎক্ষণিক বিমানগুলোকে ক্যারিয়ারে ফিরিয়ে আনা হয় এবং লঞ্চারগুলোও নিরস্ত্র করা হয়।
কিন্তু পরে কেন আক্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করা হল সে বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য জানা যায়নি।
এদিকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চলমান পরিস্থিতিতে এই ঘটনা ব্যাপক প্রভাব সৃষ্ট করবে। কারণ, হামলা না চালালেও যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ নেয়ার খবরে চুপ থাকবে না ইরান। ফলে এখন না হলেও যে কোনো মুহূর্তে অপ্রত্যাশিত কোন সংঘাতের সম্ভাবনা জোরদার হয়ে ওঠবে। যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও কোন মন্তব্য জানায়নি তেহরাণ।
দ্য গার্ডিয়ান
এসকে