ইরানের সীমান্ত লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে দেশটি। সংসদ স্পিকার আলী লারিজানি এক শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন। এক সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের 'গোয়েন্দা' ড্রোন বিধ্বস্ত করার পর তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
বুধবার (২৬ জুন) লারিজানি বলেন, ‘আমাদের সীমান্তের বিরুদ্ধে যে কোনো আগ্রাসন এড়ানোর জন্য তাদের ড্রোনটি বিধ্বস্ত করা তাদের জন্যে ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। যদি তারা আমাদের সীমানা লঙ্ঘনের ভুলটির পুনরাবৃত্তি করে তবে, ইরানের প্রতিক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে।’
ইরান বলেছে, মার্কিন বিমানটি ইরানের আকাশসীমার ভেতরে ঢুকে পড়েছিল, যে অভিযোগ ওয়াশিংটন অস্বীকার করে আসছে। এরপরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিশোধ নিয়ে ইরানে বিমান হামলার অনুমোদন দেয়। তবে, অনেক মানুষ মারা যাবে ভেবে শেষ মিনিটে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। দুই পক্ষের চরম উত্তেজনার মধ্যে ট্রাম্প ইরানকে ‘বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র’ বানানোর হুমকি দেয়। বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে কোনো যুদ্ধ একটা তড়িৎ যুদ্ধ হবে। কিন্তু, তেহরানের নেতাদের বোমা বিস্ফোরণের পরেও সামরিক সংঘর্ষ এড়াতে তার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক ইরানের মানবাধিকার কেন্দ্র (সিআরআরআই) বলেছে, বিশ্বজুড়ে ১১৬ জন ইরানি মানবাধিকার রক্ষাকর্মী এবং গোষ্ঠীগুলি এই দুই শত্রুর মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ‘বিধ্বংসী’ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে। অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক, আইনজীবীদের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ লাখ লাখ সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর হবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে সহিংস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম দেবে যা সাধারণ বেসামরিকদের জন্য মানবেতর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে আমরাও ভীত।’
২০১৫ সালে তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বিশ্বের পরাশক্তিদের করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে ট্রাম্প গত বছর বের হয়ে গেলে দেশদুটির সম্পর্কের অবনতি হওয়া শুরু করে, যা এই মুহূর্তে অত্যন্ত বাজে অবস্থায় রয়েছে। চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাতে উপসাগরীয় অঞ্চলে এক যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করে। ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় তেহরান তার ইউরেনিয়াম উৎপাদনকে দ্বিগুণ করেছে এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে এটি পারমাণবিক চুক্তি দ্বারা নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে যাবে বলে ঘোষণা করে, যদি না ইইউ চুক্তিটি সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
অভিনব এক পদক্ষেপ হিসেবে সোমবার ট্রাম্প ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ও অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ইরান সর্বশেষ এই নিষেধাজ্ঞাকে একটি 'নির্বোধ' পদক্ষেপ হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সূত্র : রয়টার্স
এসজেড