পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালিতে ২৩ জন নাবিক ও ক্রুসহ ব্রিটেনের একটি তেল ট্যাংকার আটক করেছে ইরান। শুক্রবার (১৯ জুলাই) ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ট্যাংকারটিকে আটক করে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ‘আইআরটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, হরমুজ প্রণালীতে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমার আইন লঙ্ঘন করায় ‘স্টেনা ইমপেরো’ নামে ব্রিটেনের এই তেল ট্যাংকারটিকে আটক করা হয়। জাহাজটি তেল সংগ্রহের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
আইআরজিসি’র হাতে আটক জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থাপনা দল এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা বর্তমানে জাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি। যদিও প্রতিবারই আমরা তা করতে ব্যর্থ হয়েছি।’
এর আগে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ‘আইআরজিসি’র জনসংযোগ দপ্তর শুক্রবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়, 'ইরানের হরমুজ প্রণালীর বন্দর ও সামুদ্রিক যান চলাচল বিষয়ক সংস্থার অনুরোধে ‘স্টেনা ইমপেরো’ নামে একটি ব্রিটিশ তেল ট্যাংকারকে আটক করা হয়। ট্যাংকারটি বর্তমানে বাহিনীর হেফাজতে আছে এবং এর সকল ক্রু নিরাপদে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের প্রতি ট্যাংকারটি সম্মান দেখায়নি; যে কারণে হরমুজ প্রণালীতে কর্মরত ইরানের ওই সংস্থা তেল ট্যাংকারটি আটকের জন্য 'আইআরজিসি'র কাছে অনুরোধ জানায়।'
এ দিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ট্যাংকার আটক হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এর আরও তথ্য অনুসন্ধান করা হবে।’ এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতেই জরুরি বৈঠক করেছে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এক বিবৃতিতে তেহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, “ইরান ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার ছেড়ে না দিলে তেহরানকে ‘কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।” একই সঙ্গে তিনি এখনই কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘লন্ডন তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছে।’
অপর দিকে দুই মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার দাবি, ‘ব্রিটিশ পতাকাবাহী তেলের ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরোকে আটক করা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি তেহরান এই কাজটি করেছে। আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় জলযান চলাচলে ইরানের একের পর এক বৈরী আচরণের সাম্প্রতিক নমুনাগুলোর মধ্যে এটিও একটি।’
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘ব্রিটেনের তেলবাহী ট্যাংকার আটকের ঘটনা ও সকল সঙ্কট নিরসনে আমি খুব শিগগিরই ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই।’
সূত্র : সিএনএন
এসজেড