• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০১৯, ১০:৫৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৬, ২০১৯, ১০:৫৭ এএম

বিপদজনক খেলায় মেতেছে ভারত: পাকিস্তান

বিপদজনক খেলায় মেতেছে ভারত: পাকিস্তান
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি- ছবি: সংগৃহিত

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল, উপত্যকায় সেনা বাড়ানো এবং কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীদের গৃহবন্দি করার জেরে সৃষ্ট উত্তেজনাকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পাকিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেছেন,'ভারত বিপজ্জনক খেলা খেলছে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এর পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে'।

জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার ভারতীয় পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ বলে নিন্দা জানিয়ে সক্রিয়ভাবে এর বিরোধিতা করার সংকল্প ব্যক্ত করেছে পাকিস্তান।

ভারতের বিরোধী দলগুলোর তুমুল আপত্তির মধ্যেই ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতির আদেশে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার কথা জানান। সংবিধানের এ অনুচ্ছেদ বলেই ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীর এতদিন স্বায়ত্ত্বশাসনের বিশেষ মর্যাদা পেয়ে আসছিল।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার তা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির পাশাপাশি ‘জম্মু ও কাশ্মীর সংরক্ষণ বিল’ নামে নতুন একটি প্রস্তাব পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেছে। ফলে জম্মু-কাশ্মীর যে শুধু বিশেষ মর্যাদা খোয়াল তাই নয়, রাজ্যের স্বীকৃতিও এখন হারনোর পথে।

সরকারের আনা বিলটি পাস হলে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ কেন্দ্রশাসিত দুইটি আলাদা অঞ্চল হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে আইনসভা থাকবে, তবে লাদাখে তা থাকবে না।

‍পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, “পাকিস্তান মোদী সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং এ প্রচেষ্টা আটকাতে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।” ভারত কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘ প্রস্তাবনা লঙ্ঘন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ভারত এককভাবে কাশ্মীরের মর্যাদা বদলাতে পারে না। তাদের এ  সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ এবং পাকিস্তান। কাশ্মীরের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং নৈতিক বিকাশের জন্য পাকিস্তান লড়াই চালিয়ে যাবে।”

ভারতের পার্লামেন্টেও  সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা হয়েছে এবং দেশটির কয়েকজন আইন বিশেষজ্ঞ একে সংবিধানের উপর আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছেন।

কাশ্মীর নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তের পর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না-ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সতর্কতার এ নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর উপত্যকার নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছিল। রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিসহ শীর্ষ নেতাদের রোববার রাত থেকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

থমথমে ওই পরিস্থিতির মধ্যে ভারতজুড়ে নানা জল্পনা ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ছে। যা আটকাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য সরকারগুলোকে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো ভুয়ো খবর, যাচাই না-করা খবর, গুজব বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যেনে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট এবং সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে, সে দিকেও প্রশাসনকে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন