
ভারতের নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যে বৈঠকে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন ও ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) ভিডিও কনফারেন্সে যৌথভাবে খুলনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট (বিআইপিএসডি), রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকায় বিবেকানন্দ ভবন উদ্বোধন ও বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়াও দুই সরকার প্রধান ৬টি ও ১টি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই করেন। এ সকল স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের আওতায় রয়েছে-
• ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত; ওই পানি তারা ত্রিপুরা সাবরুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে।
• উপকূলীয় এলাকায় নজরদারিতে সহযোগিতা বিনিময়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দুই দেশ।
• চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের বিষয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই হয়েছে।
• চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নে।
• ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব হায়দ্রাবাদের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
• সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময় এবং যুব উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হায়দ্রাবাদ হাউজে পৌঁছালে প্রধান ফটকে গিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ভারত প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দেয়।
ভারতে আমন্ত্রণের জন্য উদ্বোধনী বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ভারত সরকারের আর্থিক অনুদানে বাংলাদেশে নির্মিত রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ ভবন ছাত্রাবাসের শুভ উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। রামকৃষ্ণ মিশন বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন খাতের উন্নয়নেও এ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এ স্থাপনা নির্মাণে আর্থিক অনুদান প্রদানের জন্য আমি ভারত সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুলনায় অবস্থিত ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে স্থাপিত বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট উদ্বোধন করা হলো। এ প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত বিভিন্ন উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ওই অঞ্চলের ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে নানা ধরনের সেবা দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ভূমিকা রাখবে। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনশ’র বেশি ব্যক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিআইপিএসডিআই এ অঞ্চলের নারীদের বিভিন্ন পেশায় প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। এছাড়া প্রকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের শিল্প খাতের উন্নয়নেও এ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি রফতানির সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জ্বালানি চাহিদা পূরণ সহজ হবে বলে আশা করছি।
বিএস/এসকে/এসএমএম