দিল্লির মারকাজ নিজামউদ্দিনের তাবলিগ জামাতের যোগ দেয়া মানুষদের নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশই বাড়ছে গোটা ভারতে। সেই উদ্বেগ এক ধাক্কায় বাড়িয়ে দিল সরকারের একটি পরিসংখ্যান। ওই সমাবেশে হাজির হওয়া এমন প্রায় ৬৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে শুক্রবার (৩ এপ্রিল) সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়, “তাবলিগ জামাতে যোগ দিয়েছেন এমন ৬৪৭ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে গত দু’দিনে।
দেশের ১৪টি রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন আক্রান্ত হওয়া এই মানুষগুলো। এমনও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
মার্চ মাসের শুরু থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আলামি মারকাজ বাংলেওয়ালি মসজিদে ধর্মীয় জমায়েতের ডাক দিয়েছিল তাবলিগ জামাত। তাতে যোগ দিতে এসেছিলেন দেশ-বিদেশের কয়েক হাজার মানুষ। বিশ্বজুড়ে করোনা তখন রীতিমতো থাবা বসিয়েছে। সেই আবহেই মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরঘিজস্তান থেকে বিদেশিরা এসেছিলেন। ১৫ মার্চ অনুষ্ঠান শেষের পরেও নিজামউদ্দিন এলাকাতেই থেকে যান অনেকে। জনতা কার্ফুর আগের দিন অর্থাৎ ২১ মার্চ ওই মসজিদে ছিলেন ১ হাজার ৭৪৬ জন। যাদের মধ্যে ২১৬ জন বিদেশি ছিলেন। আর ভারতে সেই সময়ে বিদেশ থেকে আসা মুসলিম ধর্মপ্রচারক ছিলেন ৮২৪ জন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে খবর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স সহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ১ হাজার ৩০০ প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন সমাবেশ। সেই সব প্রতিনিধি এবং তাদের সংস্পর্শে আসা মিলিয়ে বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) পর্যন্ত মোট ৫৫০ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট আসে। আরও অনেকে ভর্তি দিল্লি সহ দেশের ২৩টি রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই সমাবেশে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণকারী এসেছিলেন তামিলনাড়ু থেকে। ওই রাজ্য থেকে এসেছিলেন প্রায় ৫০০ জন। উত্তরপ্রদেশ এরই মধ্যে ১৬০ জনকে চিহ্নিত করেছে, যারা ওই ধর্মসভায় অংশগ্রহণ করেছেন। মহারাষ্ট্র থেকে ১০৯, মধ্যপ্রদেশ থেকে ১০৭, বিহার থেকে ৮৬ জন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৭৩ জন, তেলঙ্গানা থেকে ৫৫ জন, ঝাড়খণ্ড থেকে ৪৬ জন ওই ধর্মসভায় যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
মেঘালয়, ওড়িশা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, আন্দামান, হিমাচল প্রদেশ থেকেও মানুষ যোগ দেন ওই তাবলিগ জামাতে। আন্দামানে ৯ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে যারা ওই তাবলিগে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। যাদের মধ্যে অনেকেই এরই মধ্যে দিল্লি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের গন্তব্যে ফিরে গেছেন। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কাটা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। আনন্দবাজার।
এসএমএম