গত সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েও পাওয়া যায়নি ভারতের আসামের বালিয়াপাড়া হাইস্কুলের ওই শিক্ষিকাকে।
আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় পরিবার। দিনশেষে থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পার হওয়ার পর মঙ্গলবার (৭ জুলাই) স্থানীয় এক স্কুলঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় ওই শিক্ষিকার মরদেহ।
তার পরনের পোশাক এলোমেলো ও ছেঁড়া ছিল। মুখ পুড়িয়ে দেয়া হয় অ্যাসিডে। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন।
পুলিশের ধারণা, শিক্ষিকাকে মেরে ফেলার আগে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। মুখ বিকৃত করে দেয়া হয় অ্যাসিডে। শিক্ষিকা হত্যার এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই উত্তেজনা তৈরি হয় আসামের উদালগুড়িতে।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালেও হাঁটতে বেরিয়েছিলেন ১ নম্বর কলাইগাঁওয়ের বাসিন্দা ওই শিক্ষিকা।
কিন্তু, বেলা গড়ালেও বাড়ি ফিরে আসেননি তিনি। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে কারও বাড়ি যাওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে সংক্রমণ বাঁচাতে তিনি কোথাও যান না। তাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
রাস্তাঘাটে বিপদের আশঙ্কা করছিলেন। রাতে থানায় গিয়ে তারা একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন। কিন্তু থানায় ডায়েরি করার পর আরেক দিন সন্ধ্যা গড়ালেও পুলিশ ওই শিক্ষিকার খোঁজ দিতে ব্যর্থ হয়।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে উদালগুড়ির ইউএন ব্রহ্ম আকাদেমি স্কুল চত্বর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানোর জেরে আশপাশের লোকজন সেখানে ভিড় করেন। খবর দেয়া হয় থানায়।
শেষ পর্যন্ত পুলিশ গিয়ে ওই স্কুলের একটি ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। শনাক্ত হয় মরদেহ নিখোঁজ শিক্ষিকার। শিক্ষিকার বাড়ি থেকে ওই স্কুলের দূরত্ব বেশি নয়। আবার ওই স্কুল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে কলাইগাঁও এক নম্বর সেনা শিবির। সেনা শিবিরের কাছে, জনবহুল এলাকায়, স্কুলের মধ্যে কী করে একজন শিক্ষিকাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ইউএন ব্রহ্ম আকাদেমি স্কুলের একটি ঘর থেকে শিক্ষিকার অর্ধনগ্ন মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা, মরদেহ যাতে শনাক্ত না করা যায়, সেজন্য পরিকল্পিতভাবে অ্যাসিড ঢেলে মুখ পোড়ানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের মনে হয়েছে, খুন করার আগে ওই শিক্ষিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল।
কেএপি