সোমবার (১৪ জুন) ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির বিচার শুরু হচ্ছে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বেশ কয়েকটি মামলা করেছে সেনাবাহিনী।
সু চির আইনজীবীর বরাতে সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, ২৬ জুলাই পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বিচারকার্য চলবে। শুনানি হবে প্রতি সোমবার।
সামরিক অভ্যুত্থানের চার মাসেরও বেশি সময় পরে সোমবার জান্তা আদালতে তার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। অবৈধভাবে ওয়াকি-টকি আমদানি এবং বিশৃঙ্খলা উসকে দেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলা করা হয়।
মামলাগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ শাসনামলের অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টস আইন লঙ্ঘনেরও অভিযোগ রয়েছে। যার সাজা হতে পারে ১৪ বছরের জেল। যদিও সু চির আইনজীবী দল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার সামরিক জান্তা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ৬০ হাজার ডলার ও সাতটি সোনার বার ঘুষ গ্রহণ করেছেন। নতুন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে আরও অন্তত ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা পেতে পারেন সু চি।
একই সঙ্গে নতুন ঘোষণায় সেনা সরকার দাবি করেছে, রাষ্ট্রীয় জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোকসান গুনেছে সু চির সরকার। সু চি ছাড়াও এসব অভিযোগে তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে জান্তা।
১৫ জুন তার আরেকটি মামলার বিচার শুরুর কথা রয়েছে। এই মামলায় সু চিসহ তার দল এনএলডির সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আনা হয়েছে।
১৯৯০ সালের নির্বাচনের পরেও অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির দলকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। সেসময় ১৫ বছরেরও বেশি সময় গৃহবন্দী ছিলেন সু চি। ২০১০ সালের মুক্তির পর আবারও ক্ষমতায় আসেন এই নেত্রী। ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ফেব্রুয়ারিতে আবারও সেনাঅভ্যুত্থানে তার সরকারের পতন ঘটে।
আল-জাজিরা জানায়, সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে গৃহবন্দী আছেন ৭৫ বছর বয়সী অং সান সু চি। ২৪ মে প্রথমবার প্রকাশ্যে হাজির হয়ে আদালতে ৩০ মিনিটের শুনানিতে অংশ নেন তিনি। গৃহবন্দী হওয়ার পর মাত্র দুবার আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছেন সু চি।
অন্যদিকে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং আন্দোলন চলছে। আন্দোলনরতদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৮৪৯ জন নিহত হয়েছে। আটক হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ জন।