ভারতের দিল্লিতে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে মাথা ন্যাড়া করে এবং মুখে কালি মাখিয়ে রাস্তায় ঘোরানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দিল্লি মহিলা কমিশন এ তথ্য জানায়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত আট নারীসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরুণীর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এ ঘটনায় মুখ খুলেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা। কাঁদতে কাঁদতে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সুবিচারের আশা আর করি না। শুধু মেয়ে বাড়ি ফিরুক। কোনো নারী, কোনো মেয়েকে যেন এমন দিন দেখতে না হয়।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতিতা তরুণী তিন বছরের সন্তানের মা। ঘটনার পর থেকে তিনি এখনও ভর্তি হাসপাতালে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দিল্লির শাহদরা এলাকায় একটি ১৪ বছরের নাবালক ওই তরুণীকে প্রেম নিবেদন করে। কিন্তু তরুণী তাকে ফিরিয়ে দেওয়ায় সে আত্মহত্যা করে। ওই তরুণীকে নাবালকের আত্মঘাতী হওয়ার কারণ হিসেবে দাবি করে তাকে অপহরণ করেন মৃতের পরিজনরা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, তারপরই ঘটে গণধর্ষণ এবং মুখে কালি মাখিয়ে, মাথা মুড়িয়ে প্রকাশ্যে ঘোরানোর ঘটনা। তরুণীকে বেধড়ক মারধর করার ছবিও ধরা রয়েছে ভিডিওতে।
ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বলেন, কোনো নারীকে যেন এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে কখনও যেতে না হয়। তিনি সুবিচার পাওয়ার আশা করেন না।
ঘটনার পরই বাড়িতে এসেছিলেন বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর। দেখা করেছেন কংগ্রেসের অনিল চৌধুরীও। কিন্তু এতে বিরক্তই হচ্ছে তরুণীর পরিবার।
তরুণীর বাবা বলেন, ‘না চাইতেই আমাদের দু’মাসের রেশন দিয়ে গিয়েছেন ওরা। আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কোনো কারণ ছাড়া কি কেউ এভাবে সাহায্য করে? চাইতে চাইতে মাথা কুটে মরে গেলেও অনেকের সাহায্য মেলে না।’
আর তরুণীর বোন বলেন, ‘সে দিন যদি মানুষ একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন, তাহলে আজ সাহায্যের দরকার হতো না।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন আপনারা চান আমরা কী বলি? যা হওয়ার হয়ে গেছে, সব ভুলে চলো আবার নতুন শুরু করি!’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনের মধ্যে আট জন নারী এবং চার জন পুরুষ।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
ইউএম