প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্য এবং ক্ষমতাসীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের হত্যার একটি ভয়াবহ চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই পরিকল্পনা নিয়েছিল। এই চক্রান্তের যৌথ সহযোগী লন্ডনে নির্বাসিত বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান এবং ঢাকাস্থ পাকিস্তানের হাই কমিশন। তবে বাংলাদেশের অনেক শীর্ষ বিএনপি নেতা এ চত্রান্তের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি দ্য ইকোনমিক টাইমসের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিকল্পিত হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য বিপুল পরিমাণে অস্ত্র চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠায় আইএসআই। কিন্তু প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম সহযোগীদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার তা সফল করতে দেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে এই চক্রান্তে আইএসআই-এর সাবেক প্রধান লে. জেনারেল নাভিদ মুখতারের বড় ভূমিকা রয়েছে। সেই সঙ্গে আইএসআই-এর আরো কয়েকজন গোয়েন্দা এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের কয়েকজন সদস্যও এ চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত। তবে পাকিস্তানপন্থি রাজনৈতিক দল জামায়াত-এ-ইসলামী এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত কি না সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একে-৪৭, স্বয়ংক্রীয় কারবাইন রাইফেল ও গ্রেনেড নিয়ে গ্রিসের পতাকাবাহী একটি জাহাজ বাংলাদেশের একটি বন্দরে ৩০ ডিসেম্বরের আগেই প্রবেশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আগেই সেটি ডুবে যায়।
আরেকটি সুত্র জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিলো। এছাড়া রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে ঢাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনাও নেয়া হয়।’ এর আগে ২০০৪ সালে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। যে মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামীর তালিকাতে দাউদ ইব্রাহিম, উলফা প্রধান পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে তারেক রহমানের নামও আছে। সে বছরেই শেখ হাসিনার ওপর ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয় যাতে বেশ ২৪জন নেতাকর্মী মারা যান।
ইকোনমিক টাইম এর আগে প্রতিবেদন করে, দুবাইয়ের এজেন্টদের মাধ্যমে তহবিল পরিচালনা করে পাকিস্তানপন্থি বিএনপি এবং মৌলবাদী জামায়াত-ই-ইসলামীকে আবারো ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করছে আইএসআই। ধারণা করা হয়, আইএসআই-এর এই কৌশলের মূল চাবিকাঠি ছিলেন তারেক রহমান। আইএসআই-এর দুবাই ভিত্তিক এজেন্টদের মাধ্যমে তারেকের সহযোগীদের কাছে অর্থ স্থানান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সপরিবারে হত্যায় একাধিকবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রতিবারই এসব ষড়যন্ত্রে লন্ডনে নির্বাসিত বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাই কমিশনের সংশ্লিষ্টতার কথা শোনা গেছে।
সূত্র ইকোনমিক টাইমস