রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করে আসছে ভারত। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আগের মতো নেই বললে চলে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বন্ধে সম্প্রতি মস্কোর বিরুদ্ধে ভোটও দেয়নি দিল্লি। সব মিলিয়ে রুশ সামরিক সরঞ্জামের মজুত এবং দেশটির ওপর নির্ভরতার জন্য ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে হাঁটতে পারে বাইডেন প্রশাসন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বৃহস্পতিবার সিনেটে এক শুনানিতে আইনপ্রণেতাদের বলেন, মস্কোর সঙ্গে দিল্লির যে ঐতিহাসিক একটা ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক রয়েছে তা মার্কিন নিরাপত্তার জন্য কতটুকু হুমকি এ নিয়ে পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
লু বলেন, এটি এমন এক প্রশ্ন যে আমরা নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখছি। কারণ, সিএএটিএসএ-এর অধীনে মার্কিন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা অথবা মওকুফ করবে কিনা তা যাচাই করে দেখছে।
বিশ্ববাজারে রুশ অস্ত্রসম্ভারের জোগান ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসন ‘কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাংশন আইন’ বা ‘সিএএটিএসএ’ চালু করে। আইন অনুযায়ী, রুশ অস্ত্র যারাই কিনবে তারাই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে। আইনটি মার্কিন নির্বাচনে ক্রেমলিনের হস্তক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে পাস হয়।
এই আইনের অধীনে ২০২০ সালে ন্যাটোর মিত্র তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেও ছাড় দেননি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত মস্কোর কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার জবাবেই আঙ্কারাকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি মার্কিন প্রশাসন।
২০১৮ অক্টোবরে রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০-এর পাঁচটি ইউনিট কেনার জন্য চুক্তিতে সই করেছিল ভারত। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল আগামী দিনে তাদের সিএএটিএসএ’র আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হতে পারে।
সম্প্রতি এ বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে, যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন সামরিক আগ্রাসনে রাশিয়ার বিপক্ষে ভোটদানে বিরত থাকে ভারত।
রাশিয়ার বিপক্ষে না যাওয়ার জন্য একাধিক কারণ তুলে ধরেছে দিল্লি। রাশিয়ার প্রতি ভারতের প্রবল প্রতিরক্ষা নির্ভরতার বিষয়টিকে সামনে আনা হচ্ছে সেই কূটনৈতিক কারণকে। পাশাপাশি মস্কোর বিরুদ্ধাচরণ না করার ফলে রাশিয়া থেকে ভবিষ্যতে অস্ত্র কেনার বিষয়টি এখন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা থেকে ভারতকে ছাড় দেবে না বলে ধারণা করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: দ্য হিল।
এসকেএইচ//