• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২২, ০৭:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৮, ২০২২, ০৭:০৪ পিএম

ভয়াবহ দুর্যোগে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যখাত

মুঠোফোনের আলোয় অস্ত্রোপচার

মুঠোফোনের আলোয় অস্ত্রোপচার

ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে রয়েছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যখাত। দেশটিতে চিকিৎসা সামগ্রীর প্রায় সবই আমদানি নির্ভর, আর দেশটিতে চলমান সংকটের কারণে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব সরঞ্জাম সংকটে পড়েছে দেশটির প্রায় সবগুলো হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র। ধুয়ে বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে একই সরঞ্জাম। এমনকি, মোবাইল ফোনের আলোয় করা হচ্ছে অস্ত্রোপচারের মতো জটিল কাজ। খবরটি প্রকাশ করেছে সিএনএন।

তিন বছর বয়সী মিরু লাল রঙের খেলনা গাড়ি নিয়ে খেলায় ব্যস্ত। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, যে ঘরে সে তার বাবা-মায়ের সাথে সে থাকে, তার ঠিক বাইরেই চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে আছে তার দেশ শ্রীলঙ্কা। বিদ্যুৎবিহীন দেশটিতে এখন খাদ্যের অভাবের সাথে আছে চিকিৎসা সামগ্রীর চরম সঙ্কট। ম্যালিগন্যান্ট ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত শিশু মিরু। প্রায়ই খিঁচুনি ওঠে তার, কিছুক্ষণ পরই অজ্ঞান হয়ে পড়ে সে। এ রকম সময়ে প্রয়োজনীয় ঔষধটি সব ফার্মেসিতে খুঁজেও যোগাড় করতে পারছেন না মিরুর বাবা উপুল চন্দনা। সিবিএস ফিফটিএইট ডট কমকে তিনি বলেন, হাসপাতাল-ফার্মেসি কোথাও কিছু নেই। হাতে টাকা নিয়েও প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে পারছি না আমরা।

শ্রীলঙ্কার ক্ষুব্ধ মানুষ রাজপথে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে, জানাচ্ছে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি। দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তা না পেলে ভয়াবহ দুর্যোগ আরও ঘনীভূত হবে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যখাত ঘিরে। এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির চিকিৎসক প্রতিনিধিরা। শ্রীলঙ্কার চিকিৎসকদের সংগঠনের মুখপাত্র জানান, দেশটির চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধের ৮৫ শতাংশই আমদানি করতে হয়। চলমান সংকটের কারণে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব সরঞ্জাম সংকটে পড়েছে দেশটির প্রায় সব হাসপাতাল। এমনকি অস্ত্রপচারের ক্ষেত্রে একই সরঞ্জাম একাধিক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া জীবন রক্ষাকারী জরুরি ওষুধের মজুদ প্রায় নেমে এসেছে শুন্যের কোটায়।

শ্রীলঙ্কায় এখন মৌলিক পণ্যসহ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীও আমদানি করতে পর্যন্ত পারছে না। এ প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব মানবিক সংকট’ হিসেবে বর্ণনা করেছে সিঙ্গাপুরের রেডক্রস। চলমান এই সঙ্কটে দেশটির চিকিৎসকেরা বিভিন্ন চিকিৎসার সরঞ্জাম ধুয়ে বারবার ব্যবহার করতে বাধ্য হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এমনকি মুঠোফোনের আলোয় অস্ত্রোপচার করার কথাও জানিয়েছেন তারা।