
পাস্তুরিত তরল দুধসহ বাজারের অন্যান্য খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় বিএসটিআই’র কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই অসন্তোষ প্রকাশ করে।
এ সংক্রান্ত আদেশে আদালত নিরাপদ দুধ নিশ্চিত করতে বিএসটিআই ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের কাউন্সিলের কার্যপরিধি বা তারা কে কিভাবে কী কাজ করছেন -তা জানতে চায়।
তরল দুধের মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দায়ের করা এক রিটের শুনানিকালে বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয় আদালত।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ। বিএসটিআই’র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাশিদুল হাসান এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম।
আদালত বিএসটিআই ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের কাউন্সিলদের কাজের মধ্যে কোন সমন্বয় আছে কি না এবং তাদের বোর্ড মিটিংগুলো কিভাবে হয় -এসব তথ্যও জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৪ জুন (সোমবার) পরবর্তী দিন ঠিক করা হয়েছে।
গত ১৭ মে ‘পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশই নিরাপদ নয়’ সংশ্লিষ্ট আইসিডিডিআর,বির প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাজারে পাওয়া যায় এমন পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশ অনিরাপদ। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কোম্পানির দুধের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, মানুষ যেন দুধ কেনার পর তা ফুটিয়ে পান করেন।
আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানীরা দেশের ৪৩৮টি কাঁচা দুধের নমুনা এবং বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাত দুধের ৯৫টি নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করেন। এই গবেষণা ফলাফল যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড মাইক্রোবায়োলজিতে ছাপা হয়। সেখানে শিশুদের পুষ্টির প্রাথমিক উৎস এই দুধ নিয়ে গবেষণা ফলাফলকে আইসিডিডিআর,বি ‘অপ্রীতিকর’ বলে বর্ণনা করা হয়। এরপর এসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে বাজারে পাওয়া যায় এমন সকল ব্রান্ডের পাস্তুরিত দুধের মান পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি পাস্তুরিত দুধের নিরাপত্তার নিশ্চিয়তা দিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না -তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, আইসিডিডিআর,বি এবং পুলিশ মহাপরিদর্শককে ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
এমএ/এসএমএম