ঋণখেলাপিদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে জারি করা সরকারের সার্কুলার স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।মঙ্গলবার (২১ মে) বিচারপতি এফ এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে আদেশে বলা হয়।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ উচ্চ আদালত এই আদেশ দেয়। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে সন্ধ্যায় ‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন পরিশোধসংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করছেন না, তাদের জন্য বড় সুবিধা চালু করা হয়। বকেয়া ঋণের ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়েই তারা ঋণ নিয়মিত করতে পারবেন। এতে সুদ হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। আর এক বছরের ঋণ পরিশোধে বিরতিসহ ১০ বছরের মধ্যে বাকি টাকা শোধ করতে পারবেন। আবার ব্যাংক থেকে নতুন করে ঋণও নিতে পারবেন।
আর যারা এক বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করে দিতে চান, তাদের জন্য রয়েছে বড় ছাড়। তারা চাইলে তহবিল খরচের সমান সুদ দিয়েই বাকি টাকা শোধ করতে পারবেন। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর তহবিল খরচের হার সাড়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ঋণ বিরূপভাবে খেলাপি হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদনশীল খাতে স্বাভাবিক ঋণপ্রবাহ বজায় রাখতে ও খেলাপি ঋণ আদায়ে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেসব ঋণ মন্দ বা ক্ষতিজনক, মানে খেলাপি হয়ে পড়েছে, সে ক্ষেত্রে এ সুবিধা দেওয়া হবে।
এদিকে ওইদিন আরেকটি প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা করে যে, যেসব ব্যবসায়ী ঋণের সব কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করেছেন, কখনই কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হননি, তারা ‘ভালো গ্রাহক’। তাদের থেকে এক বছরে যে পরিমাণ সুদ আদায় করা হয়েছে, তার ১০ শতাংশ ফেরত দেয়া হবে।
ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এ সুবিধার ফলে ব্যাংক খাতের সংকট কাটবে না।
বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তারল্য-সংকট চলছে। কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা এত খারাপ যে, জমা টাকা ফেরত দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে ঋণখেলাপিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এমএ/বিএস