• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: মে ২৮, ২০১৯, ১১:১৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৮, ২০১৯, ১১:১৪ এএম

প্রসব পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা কমছে না

প্রসব পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা কমছে না

 

এখনও প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির কারণে বেশিরভাগ মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। প্রসব পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাসা-বাড়িতে এসব ঘটনা ঘটছে। স্বাধীনতা পর বাংলাদেশের চিকিৎসাখাত দিন দিন উন্নতির দিকে এগুলেও ওই দুই কারণে মাতৃমৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়নি।

এমন অবস্থার মধ্যেই আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) ‘মর্যাদা ও অধিকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতি সেবায় অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সরকারি তথ্যই বলছে- প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণে ৩১ শতাংশ এবং খিঁচুনিতে ২৪ শতাংশ মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। স্ত্রী ও ধাত্রী বিদ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসম্পন্ন সেবাকেন্দ্রে প্রসব না করায় এসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।

সরকারি তথ্যমতে- দেশে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ৪৭ শতাংশ, ৫৩ শতাংশ প্রসব বাড়িতে হচ্ছে অদক্ষ ধাত্রী বা কথিত ধাত্রীর হাতে। মোট মাতৃমৃত্যুর ৫৪ শতাংশই ঘটছে বাড়িতে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম কাজল দৈনিক জাগরণকে বলেন, প্রসব পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি তথ্য- মাতৃমৃত্যুর ৫৫ ভাগ মৃত্যুই হয়ে থাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।

স্ত্রী রোগ ও ধাত্রীবিদ্যা বিশেষজ্ঞ সমিতির (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রওশন আরা বেগম বলেন, প্রসব পরবর্তী সময়ে প্রসূতিকে দুটি মিসোপ্রোস্টল ট্যাবলেট (মিসোপিল) খাওয়ালে উল্লেখযোগ্য হারে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যায়। এই দুটি ট্যাবলেট কিনতে লাগে মাত্র ২৪ টাকা। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেড় লাখেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী মাঠে কাজ করলেও এই কাজের পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি। মাত্র ১৭ শতাংশ মায়ের কাছে এই জাদুকরী ট্যাবলেট পৌঁছেছে। দাম কম হওয়ায় এই ট্যাবলেট উৎপাদনে আগ্রহী নয় দেশের ওষুধ
কোম্পানিগুলোও। মায়ের আঁচলে যদি এই জাদুকরী দুটি ওষুধ আমরা বেঁধে দেই এবং পরিস্থিতি বুঝে তাকে খাওয়াই তাহলে মায়ের জীবন রক্ষা পাবে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩১ লাখ মা সন্তান প্রসব করছেন। প্রতি বছর মারা যাচ্ছেন সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে- অপুষ্টিজনিত মাতৃমৃত্যুর ২০ ভাগ ঘটছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও রক্তস্বল্পতার প্রভাবে। এর প্রধান কারণ কিশোরী মাতৃত্ব। তাছাড়া সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসবের হার বৃদ্ধিও মাতৃস্বাস্থ্যকে ফেলছে দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকির মুখে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী কোনো দেশে ১৫ শতাংশের বেশি সিজার করা যাবে না। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের হেলথ বুলেটিনে দেখা গেল- দেশের সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসবের হার ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ। বেসরকারি হাসপাতালে এ হার ৭৩ শতাংশ এবং এনজিও ক্লিনিকে ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ। অধিক অর্থের লোভে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় বেশি সিজার করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেক পুরনো। তবে এর কোনো প্রতিকার নেই। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় সিজারে মায়েদের ভবিষ্যৎ ক্ষতি হচ্ছে ঠিকই।

আরএম/টিএফ/আরআই