ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা নীতিমালা কার্যকরের ওপর হাইকোর্ট কর্তৃক স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এর ফলে ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা আপাতত বহাল থাকল।
আদেশে এ বিষয়ে আগামী ৮ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন চেম্বার আদালত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।
গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। এরপর রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
গত ২১ মে আদেশের পর মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ১৬ মে ঋণ খেলাপিদের নতুন করে একটা সুযোগ দিয়ে ২ শতাংশ ডাউন্ট পেমেন্ট জমা দিয়ে ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দিয়ে সার্কুলার দেয়। ১৬ মে এটির কথা আদালতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা বলল, এ ধরনের সার্কুলার হয়নি। এ কারণে ঋণখেলাপিদের তালিকা দিতে ২৪ জুন পর্যন্ত তাদের সময় দেন। এর মধ্যে ওইদিন বিকালে তারা এটা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এখন এ সার্কুলার চ্যালেঞ্জ করেছি।
তিনি বলেন, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণখেলাপের হাত থেকে মুক্তি পাবে, এ কারণে সিআইবিতে তাদের নাম থাকবে না। তখন নতুন করে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে যাবে। এতে ব্যাংকের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। এ কারণে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম- মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সার্কুলের কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে রুল জারি করেন। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এরপর ২৪ জুন হাইকোর্টে ঋণখেলাপিদের তালিকা দাখিল করা হয়।
এ রিটের সঙ্গে সম্পূরক আবেদন হিসেবে ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা জারি করেছিল তা স্থগিতে আবেদন করে রিটকারী পক্ষ।
এমএ/এফসি