দীর্ঘ ৬৫ বছর গোসল করেননি, পঁচা মাংস খেয়ে বেঁচে আছেন, গোবর পুড়িয়ে ধূমপান করছেন, চুল-দাড়ি বেড়ে গেলে তা আগুন পুড়িয়ে নিচ্ছেন— এটি রূপকথার কোনো চরিত্র নয়। বরং পৃথিবীর বুকে সন্ধান মিলেছে এমন অদ্ভূত এক মানুষের। সারা গায়ে মাটি লাগানো, অপরিপাটি, অগোছালো এই মানুষটিকে ‘ওয়ার্ল্ড ডার্টিয়েস্ট ম্যান’ (বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা মানুষ) বলেও আখ্যা দিচ্ছেন অনেকে।
এমন অদ্ভুত বিশেষণে আখ্যা পাওয়া এই মানুষটির নাম আমৌ হাজি। বয়স ৮৭। ইরানের মরু অঞ্চলের একটি গ্রামে তার বসবাস। কোথাও স্থির হয়ে বসে থাকলে তাকে দেখে মনে হয় মাটি বা পাথরের অংশ। গায়ের রঙ দেখতে মাটির মতো।
গ্রামবাসীরা বলছেন, অদ্ভূত এই মানুষটি নাকি ৬৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে গোসল করেননি। খেতে পছন্দ করেন শজারুর মাংস। তবে তা টাটকা নয়। কিছুদিন রেখে পঁচিয়ে সেই মাংস খেতেই তার বেশি পছন্দ। দৈনিক ৫ লিটার পানি পান করেন। নিজের মুখ দেখেন গাড়ির আয়নায়। চুল আর দাড়ি বড় হলে তাতে আগুনে পুড়িয়ে ছোট করে নেন।
৬৫ বছরেরও বেশি সময় গোসল না করার কারণ জানান আমৌ হাজি। তার ধারণা, গোসল করলেই বরং তিনি অসুস্থ হয়ে যাবেন। তাই বছরের পর বছর গোসল না করেই কাটিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
গ্রামবাসীরা জানান, আমৌ হাজি কম বয়সে কোনো কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন। এরপর থেকেই অদ্ভূত জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হন তিনি। গ্রামের বাইরে একটি গুহায় তার বসবাস। গ্রামের জনগণ তাকে একটি ছোট্ট ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ওই ঘরে থাকা পছন্দ নয় তার।
অদ্ভূত জীবনযাত্রায় আমৌ হাজি ধূমপানের ব্যাপারে বেশ সৌখিন বলে দাবি করেন।একসঙ্গে পাঁচটি সিগারেট জ্বালিয়ে নেন। পাইপও ব্যবহার করছেন। আর সেই পাইপে ভরে নিচ্ছেন গরুর গোবর, যা শুকিয়ে পুড়িয়ে নেন। এরপর পাইপে ভরে মনের সুখে টানেন।
অগোছালো, অস্বচ্ছল জীবনযাত্রায় স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছেন আমৌ হাজি। একই স্থানে দীর্ঘদিন থাকা তার পছন্দ নয়। তাই মন যেখানে চায় সেখানেই ছুটে চলে তার জীবনধারা।