আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। শুক্রবার ছুটির এই দিনটিকে ঘিরে লেখক-পাঠকদের মিলনমেলায় পরিণত হয় বইমেলা। কেউ এসেছেন বইমেলায় ঘুরতে, কেউ এসেছেন বই কিনতে। আবার কেউবা এসেছেন লেখকদের সঙ্গে আড্ডা দিতে।
স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের লাল ও সবুজ শাড়ি পরে ঘুরতে দেখা যায়। হাতে চুড়ি, এলোমেলো চুলে ছিল ফুলের খোপা। অনেক তরুণরা পরেছেন লাল সবুজ টি-শার্ট। লেখকদের সঙ্গে অনেক তরুণদের ছবি তুলতে, কথা বলতে, সেলফি তুলতে দেখা গেছে। সবমিলে স্বাধীনতা দিবস ও ছুটির দিনের বইমেলা এ লেখক-পাঠকের অভূতপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়।
কয়েকজন লেখক পাঠক ও প্রকাশকের কাছে প্রশ্ন রাখা হয় কেমন উপভোগ করছেন বইমেলা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
কথাসাহিত্যিক ও মনোবিজ্ঞানী মোহিত কামাল বলেন, “এখনকার প্রজন্মের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা, বঙ্গবন্ধুর প্রতি জানা শোনার ইচ্ছা ও সব ধরনের বইয়ের প্রতি খুব উজ্জ্বল আগ্রহ।”
তরুণ প্রজন্মের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বীজটাকে আরও বেশি রোপন করে দিতে পারলে ভালো হতো। সবাই যে বইমেলায় আসছে, বই দেখছে, বই কিনছে সবকিছু মিলিয়ে সত্যি খুব ভালোই লাগছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে অনেকগুলো বই লিখেছেন লেখক চৌধুরী শহিদ কাদের।
শহিদ কাদের বলেন, “একুশে বইমেলায় নিয়ে সত্যিকারার্থেই মানুষের আবেগ রয়েছে। প্রতিবছর বই মেলা হলেও আমাদের এখানে পাঠকদের বই পড়ার প্রতি একটা বিমুখতা রয়েছে। কিন্তু তবুও সকল শ্রেণির মানুষ বইমেলায় আসছেন। বাঙালির যে সংস্কৃতি, এই সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হচ্ছে এটা সত্যি খুব আশার কথা।”
জানিম্যান প্রকাশনীর প্রকাশক নাজনিন হক মিমি বলেন, “স্বাধীনতার ওপর আমাদের প্রকাশনী থেকে বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। যেগুলোর চাহিদা ব্যাপক। যারা ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রী বা গবেষণা করেন তারা স্বাধীনতা নিয়ে বইগুলো কিনে। অনেক অনেক শিক্ষকরাও সংগ্রহ করেন।”
সেলোয়ার, জামা, হাতের ব্যাগ এবং কপালের টিপও লাল সবুজের আদলে তৈরি করেছেন ফাতেমা আক্তার নামে এক দর্শনার্থী। কেন এমন সাজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সত্যি কথা হচ্ছে বাঙালি বলতে আমি নিজেকে গর্ববোধ করি। বইমেলা, স্বাধীনতা দিবস, জন্মশতবার্ষিকীতে করোনা লেখক-পাঠকের মিলমেলায় বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। আমি আটাশ দিনই আসা বইমেলার পাঠক। আমি আমার ছেলে, স্বামী সবাই বই পড়ুয়া।”
বইমেলায় আগত আমিনুল ইসলাম নামে এক পাঠক জানান, একদিকে আজ স্বাধীনতা দিবস অন্যদিকে মুজিবশতবর্ষ এবং বইমেলা। তিনটি আমার দৃষ্টিতে একই সূত্রে গাঁথা। তিনটির মধ্যে বাঙালি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে।
অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন স্বর্ণা বলেন, “আমরা তিন বন্ধু মিলে বইমেলায় এসেছি। অনেকদিন ধরে করোনার জন্য ঘরে বন্দি ছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতে আজকে স্বাধীনতা দিবস ও ছুটির দিন বইমেলায় এসে অন্যরকম লাগছে।”