এক লোক রোড অ্যাকসিডেন্ট করে মাথায় সিরিয়াস আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। তাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নেয়া হল। ডাক্তার পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বললেন, ‘এর ব্রেন গেছে। এই ব্রেন আর কোনো কাজে লাগবে না। ব্রেন বদলাতে হবে।’
লোকটাকে আপাতত ব্রেন ছাড়া সার্জারী করে সুস্থ করে তুললেন ডাক্তার, তারপর বললেন।
- যান বাড়ি যান
- কিন্তু ব্রেন ছাড়া?
- আরে ঢাকা শহরে বাঁচতে হলে আজকাল ব্রেন লাগে না। তবে ভাল দেখে একটা ব্রেনের খোঁজ পেলে নিয়ে এসেন, আমি লাগিয়ে দিব। আমিও খোঁজ রাখব।
লোকটি ব্রেন ছাড়াই বের হয়ে গেল। মন্দ লাগছে না মাথার ভিতরটা ফাঁকা ফাঁকা কেমন একটা ফুরফুরে ভাব। স্ত্রী সব শুনে বললেন ‘বাহ ভালই তো, আগে তুমি কাছে এলে কেমন একটা গোবরের গন্ধ পেতাম এখন সেটা নেই। এই ভালো। ব্রেন ছাড়াই থাক।’
কিন্তু লোকটা কেমন অস্বস্তি নিয়ে থাকে। সবার ব্রেন আছে তার ব্রেন নেই এটা কেমন কথা? তিনি ভিতরে ভিতরে নানাদিকে খোঁজ লাগালেন, ইন্টারনেটেও খোঁজ লাগালেন।
অবশেষে তার এক বন্ধু পুরান ঢাকায় এক দোকানের সন্ধান দিল। ওখানে নতুন পুরাতন সবধরনের ব্রেন নাকি বিক্রি হয়।
- তুই শিওর ওখানে ব্রেন বিক্রি হয়?
- ওভার শিওর। ওখানে যা। ঠিকানা তোকে এসএমএস করেছি।
- এরা ব্রেন কোথায় পায়?
- যারা মারা যায় তাদের ব্রেন ইনটেক্ট সংগ্রহ করে রাখে।
- তাই নাকি?
- হ্যারে বাবা, তুই গিয়েই দেখ না।
সেই লোক একদিন গিয়ে হাজির হল পুরান ঢাকার সেই ব্রেনের দোকানে। গিয়ে দেখে সত্যি কাচের সেলফে থরে থরে ব্রেন সাজানো। একেকটার একেক দাম।
সবচে দামিটা ৫০,০০০ টাকা।
- ৫০,০০০ টাকা এত দাম কেন ভাই?
- এটা তেমন ব্যবহারই হয়নি।
- এটা কার ব্রেন ছিল?
- এক দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদের।
- আচ্ছা সস্তার মধ্যে নেই?
- আছে, এই যে
- এটা কত?
- মাত্র ৯০ টাকা
- এত সস্তা? এটা কার ব্রেন ছিল?
- এটা এক বিখ্যাত বিজ্ঞানীর ব্রেন। এত ব্যবহার হয়েছে যে একদম ছিবরে হয়ে গেছে।
- আচ্ছা এটার মধ্যে দাম লেখা নেই। এটা কত? আরেকটা ব্রেনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় লোকটা।
- এটা? ব্রেন বিক্রেতা যেন একটু থমকালো। ‘অ্যাঁ... ইয়ে, এটা বিক্রি হবে না। ’
- কেন?
- এটা বিক্রি হয়ে গেছে।
- কে কিনল?
- কেউ কিনেনি।
- কেউ কিনেনি তাহলে আবার বিক্রি হয় কিভাবে?
- হয় হয়... ‘মগজ বিক্রি’ হয় বলেই না আজকাল আমাদের এই হাল।
- এটা কার ছিল?
- এক পত্রিকার রিপোর্টারের।
- নাহ, যাই।
- কেন ব্রেন কিনবেন না?
- কিনতেই তো চেয়েছিলাম। কিন্তু একটাও পছন্দ হল না।
- বুঝলাম না আপনি ঠিক কী চাচ্ছেন। মানে কোন ধরনের ব্রেন চাচ্ছেন।
- আমি চাই ফ্রেশ একজন মানুষের ব্রেন, নতুন পৃথিবীর নতুন মানুষ।
- বুঝেছি, তাহলে এটা নিয়ে যান।
- এটা কার ব্রেন?
- একটা শিম্পাঞ্জীর
- এটা কেন?
- ছয় মিলিয়ন বছর পর এরা মানুষ হবে... ফ্রেশ মানুষ, সমস্যা কী?