• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২১, ০৪:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১২, ২০২১, ০৫:৪০ পিএম

 খোঁজ । আনোয়ারা আজাদ

 খোঁজ । আনোয়ারা আজাদ

প্রতিনিয়তই খুঁজছে মালিহা। বোধ হয় স্বপ্নেও। এই খোঁজার শেষ কবে হবে, সে জানে না। না খুঁজতে চাইলেও মাথার একপাশে চুপটি করে বসে থাকে। সরে যায় না। মেঘ থমথম ঝমঝম থাকলে নড়াচড়া একটু বেশিই হয়। যেদিন প্রথম শুনল এত দিন যাকে সে মা বলে ডেকে এসেছে, তিনি আসলে তাঁর মা নন, মায়ের মা, মানে নানি, একমাত্র যে মামাকেও ভাইয়া বলে ডেকে এসেছে, সে-ও ভাইয়া নয়, সেদিন থেকে। নানা মারা গেছেন অনেক আগে, তাই বাবা ডাকার হ্যাপা থেকে বেঁচে গিয়েছিল। উফ্ কী জটিলতা জীবনে! চীন-ভারতের জটিলতা থেকেও কম নয়! ভাগ্যিস তত দিনে সে বড় হয়ে গেছে। চীন-আমেরিকার জটিলতা নিয়েও মাথা ঘামাতে হচ্ছে বলে এই জটিলতা তাঁর মাথাকে বিকলাঙ্গ করে দেয়নি একেবারে। এখন অনেক কিছুর সমাধান সে নিজে নিজেও করতে পারে। যেমন তার এবং সৌমেনের বিষয়টা। অবশ্য এমনটা সে নিজে মনে করত। সব শোনার পর এখন নানিও মাথা গলিয়ে ফ্যাকরা বাঁধানোর চেষ্টায়। না, জেনে যাওয়ার পরও নানিকে নানি ডাকতে পারেনি সে, মা-ই ডেকেছে। ছোট থেকে একবার কিছু শিখিয়ে দিলে মাথা থেকে বের করে দেওয়া, ও বাবা, পারা যায় না! বুলডোজার দিয়ে মাথা গুঁড়িয়ে দিলেও না। সৌমেনের বিষয়টা নানিকে জানানোর পরই গন্ডগোলটা হলো শুরু! বিজয় থেকে ইউনিকোডে কনভার্ট করার প্রয়োজনীয়তার মতোই নানি থেকে মা-তে কনভার্ট করার মতো!
তাহলে মা কোথায়?
আমেরিকা। তুমি যাকে আপু ডাকো সেই তোমার মা। পড়তে গিয়ে সেখানেই সেটেলড হয়ে গেছে যে। 
আর বাবা?
পাড়ার ছেলে। বাড়ির ছেলের মতন প্রায়ই আসত এ বাড়িতে। তুমি পেটে আসার খবর শোনার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল সে। তোমার মায়ের বয়স তখন মাত্র পনেরো। 
ছবি আছে তার?
কী করবে ছবি দেখে?
মাথায় গুঁজে রাখব! 
অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুরোনো একটা অ্যালবাম বের করে ছবি দেখানোর পর মালিহা বলেছিল, ওহ্, সে  জন্যই আপু মানে মা বিয়ে করবে না বলে নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করেছে?
তুমি একটু বড় হওয়ার পরই যখন বোঝা গেল তোমার সঙ্গে ছোঁড়াটার চেহারার সামান্য একটু মিল আছে, আমরা ওই পাড়া ছেড়ে দিয়ে এদিকটায় চলে এসেছি।
সেই থেকে খোঁজ চলছে। তাঁর চেহারার সঙ্গে মিল আছে এমন একজন মানুষকে সর্বত্র খুঁজছে মালিহা। ফেসবুকের পাতায় তো অবশ্যই।