জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দেবরদের ফাঁসাতে ৮ মাস আগে নিজের ছেলেকে হত্যা ও গুমের মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন পাবনার গৃহবধূ মেরিনা খাতুন। তবে শেষ রক্ষা হলো না। মৃত সেজে আত্মগোপনে থাকা তার ছেলে মিলন হোসেনকে (১৭) ৮ মাস পর ময়মনসিংহ থেকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (০৬ মে) রাতে আটকের পর মঙ্গলবার দুপুরে (০৭ মে) আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে মিলন। আটক মিলন হোসেন পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের বাদলপাড়া গ্রামের মৃত হজরত আলীর ছেলে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক জানান, সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের বাদলপাড়া গ্রামের মৃত হজরত আলীর পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে তার ভাইদের সঙ্গে মৃত হজরত আলীর স্ত্রী মেরিনা খাতুনের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে ৮ মাস আগে দেবরদেরকে ফাঁসাতে মেরিনা খাতুন তার ছেলে মিলনকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে বলে দেবর সাইদুল, আসলাম ও ইসলামকে আসামী করে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
মেরিনা খাতুন অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টার দিকে তার ছেলে মিলন হোসেন বাড়ি ফেরার পথে তার দেবর আসামি সাইদুল, আসলাম ও ইসলাম মিলনকে অপহরণ করে হত্যার পরে লাশ গুম করে। আদালত পাবনা সদর থানাকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দিলে পাবনা সদর থানা মামলা নিয়ে এসআই মহিউদ্দিনকে মামলাটি তদন্তের দায়ভার দেয়া হলে এ তথ্য বেড়িয়ে আসে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মহিউদ্দিন জানান, পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, সদর সার্কেল ইবনে মিজান ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হকের সার্বিক তত্বাবধানে এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ মিলনের অবস্থান নিশ্চিত হয়।
এরপর সোমবার (০৬ মে) রাতে পুলিশ ময়মনসিংহ জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে মৃত সেজে আত্মগোপনে থাকা মিলনকে জীবিত অবস্থায় আটক করে। মঙ্গলবার দুপুরে (০৭ মে) মিলন পাবনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক একেএম কামাল উদ্দিনের কাছে স্বীকারক্তিমুলক জবানবন্দী দেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক জানান, গেল আট মাসে মিলন নিজেকে মৃত প্রমান করতে আত্মগোপন করে রেখেছিল। এই ৮ মাসে সে ময়মনসিংহ, যশোর, সিলেট, ঈশ্বরদীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেছে।
একেএস