রিফাতের হত্যাকারীদের ধরতে গোয়েন্দা ও পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০১৯, ০১:৩৩ পিএম রিফাতের হত্যাকারীদের ধরতে গোয়েন্দা ও পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি

বরগুনার কলেজছাত্র রিফাত শরীফের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে তৎপরতা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো বিভাগ জুড়ে গোয়েন্দা নজরদারীর পাশাপাশি তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব ও পুলিশ। সারা বিভাগ জুড়েই চলছে এক প্রকার অঘোষিত রেড এলার্ট।

পুলিশ রিফাতের হত্যাকারীদের ছবির সঙ্গে চেহারার কোনো মিল পেলে অথবা সন্দেহভাজন মনে হলে তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ না হলে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এমনিভাবে এরই মধ্যে রিফাত হত্যায় জড়িত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন বরিশাল নৌ-বন্দরের এমভি মানামি লঞ্চ থেকে ৪ যুবককে সন্দেহজনকভাবে ধরে আনা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাইয়ে রিফাত হত্যার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃকতা না থাকায় পরে ছেড়ে দেয়া হয়।

তাছাড়া শুক্রবার ভোরে আরও ৪ জনকে সন্দেহজনকভাবে ধানায় ধরে এনেছে মহানগরীর বন্দর থানা পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বরগুনা থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, বরগুনার রিফাত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি এখন দেশ জুড়ে আলোচিত ঘটনা। এই একটি দিকেই তাকিয়ে আছে গোটা দেশ।

তাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোন আসামি যাতে বরিশাল ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তৎপর রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই মহানগরীর প্রতিটি সড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেক পোস্ট ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বিভাগীয় শহর বরিশালে একটি বৃহত্তর নদী বন্দর দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। নদী ও সড়ক পথ হয়ে যাতে কেউ পালাতে না পারে সেজন্য পুলিশ তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, লঞ্চ ছাড়ার পূর্বে প্রতিটি নৌ বন্দরের প্রতিটি লঞ্চে তল্লাশি করা হচ্ছে। ডেক, কেবিন এমনকি লঞ্চের টয়লেটে পর্যন্ত তল্লাশি করা হচ্ছে। তারপরই পুলিশের নির্দেশে লঞ্চ ছাড়ছে। ঠিক একইভাবে দুটি বাস টার্মিনালের বাসগুলোতেই তল্লাশি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মানামী লঞ্চ থেকে যে ৪ জনকে সন্দেহজনকভাবে ধরে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে ঘটনার এক আসামির অনেকাংশে মিল ছিল। তাই তার প্রতি সন্দেহ বেশি ছিল। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগীতে। কিন্তু সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। পরে তাকে তার বোনের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।

অপরদিকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রিফাত হত্যায় জড়িত ৩ জনকে এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা ৩ জনই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তবে ঘটনার মূল হোতা সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী, রিসান এখন গ্রেফতার হয়নি।

তিনি বলেন, তারা যাতে বরিশালের বাইরে বের হতে না পারে সে জন্য বরিশালের ভুরঘাটা, ভোলা, পিরোজপুরের প্রবেশদ্বারে পুলিশের চেক পোস্টসহ বিভিন্ন তৎপরতা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই আসামিরা গ্রেফতার হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্য দিবালকে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। গুরুতর আহত রিফাতকে প্রথমে বরগুনা সদর ও পরে দুপুর ১টায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে বিকাল সোয়া ৪টায় শেবাচিম হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রপচারের সময় মৃত্যুরকোলে ঢলে পড়েন রিফাত শরীফ। তাকে কুপিয়ে জখমের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদেও সনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারের তৎপরতা চলছে।


একেএস


 

আরও সংবাদ