পদ্মা সেতুতে বসল ১৪তম স্প্যান, দৃশ্যমান হলো ২১০০ মিটার

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০১৯, ০৫:১২ পিএম পদ্মা সেতুতে বসল ১৪তম স্প্যান, দৃশ্যমান হলো ২১০০ মিটার

পদ্মা সেতুর চতুর্দশ (১৪তম) স্প্যান বসেছে শনিবার (২৯ জুন) বিকেল ৪টার দিকে। এর মধ্য দিয়ে দেশে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই পদ্মা সেতুর ২১০০ মিটার দৃশ্যমান হলো। ‘৩-সি’ নম্বর এই স্প্যান মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১৫-১৬ পিলারে স্থাপন করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার এবং পরে শুক্রবার স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া ও পিলারের কাছে পলি জমার কারণে ১৪তম এ স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়নি।

পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ন কবির এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ইতিমধ্যে পলির স্থান চিহ্নিত করতে সার্ভে শেষে ড্রেজিং শুরু হয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত এই ড্রেজিং চলে। পরে সকাল ১০টার পর স্প্যান ওঠানোর কাজ শুরু হয়। পরে শনিবারই স্প্যানটি বসানো সম্ভব হলো।

এর আগে বৃহস্পতিবার স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওনা দিয়ে ১৫ নম্বর খুঁটির কাছে নোঙর করে রাখা হয়। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ে স্প্যানটি রওনা দিতে বিলম্ব হয়। এছাড়া ১৫-১৬ নম্বর পিলারের কাছে পলি জমে থাকার কারণে ড্রেজিং করে পলি অপসারণের কাজও চলছে। ভাসমান ক্রেনটি পলি থাকার কারণে নোঙর করতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই পলি অপসারণ করার পর এটি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ২১০০ মিটার দৃশ্যমান হলো।

ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের আর ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বহন করে নিয়ে যায় ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৪২টি খুঁটির মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯টি খুঁটি সম্পন্ন হয়েছে। ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৯০টি পাইল স্থাপন হয়ে গেছে। ৪১টি স্প্যানের এ পর্যন্ত ১৩টি স্প্যান বসেছে।

পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ন কবির আরো জানান, বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এনআই