নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে নিয়ে জেলার পাঁচজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হলেন।
আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক। এই হাসপাতালটি করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য রূপান্তর করা হচ্ছে। অন্যরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত সপ্তাহের শেষের দিকে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা দুজনই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে শুরু করেন। তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) জানানো হয় জেলা প্রশাসকের নমুনা নেগেটিভ অর্থাৎ তার দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। অপরদিকে সিভিল সার্জনের নমুনা পজেটিভ, অর্থাৎ তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সিভিল সার্জন এখন আইসোলেশনে আছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শামসুদ্দোহা সঞ্চয় জানান, তার একজন সহকর্মী চিকিৎসকসহ চারজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের রাজধানীর কুর্মিটোলাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে প্রথম একটি বেসরকারি ক্লিনিকের একজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হন। তিনি নিয়মিত সেই ক্লিনিকে রোগী দেখতেন। হঠাৎ করে তার করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। পরে তার নমুনা পরীক্ষা করলে করোনা শনাক্ত হয়। পরে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৮ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন নারায়ণগঞ্জ জেলা করোনা বিষয়ক ফোকালপারসন এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা করোনা বিষয়ক ফোকালপারসন হিসেবে জাহিদুল ইসলাম বিভিন্ন সময় নমুনা সংগ্রহের জন্য জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়েছেন এবং করোনা বিষয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এ সময় তিনি করোনা আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে তার নমুনা পরীক্ষা করা হলে তার করোনা শনাক্ত হয়। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।
১০ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের একজন চিকিৎসক। মেডিসিন কনসালটেন্ট (৪২) এই চিকিৎসকের করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী তিনি করোনা পজিটিভ। একই দিন নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালের (৪৫) একজন চিকিৎসকের শনাক্ত করা হয়।
শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইমতিয়াজের করোনা শনাক্ত করা হয়। নারায়ণগঞ্জে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হন তিনিও।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নার্স, ওয়ার্ডবয় ও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জে শনিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ জন। মারা গেছে ৯ জন।
এসকে/এসএমএম