ভিটামিন ব্যবহারে আনারসের বাম্পার ফলন

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২১, ০৯:০৬ পিএম ভিটামিন ব্যবহারে আনারসের বাম্পার ফলন

এক ধরনের ভিটামিন ব্যবহারে রাঙামাটির নানিয়ারচরে আগাম আনারসের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই ভিটামিন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক নয় বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক।

রাঙামাটিতে ১১শ হেক্টর জমিতে আগাম আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। আনারসের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দামও পাচ্ছে অনেক বেশি। তাই তারা অত্যন্ত খুশি।

জেলা শহরের বনরুপা সমতাঘাট বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, আগাম আনারসে ভরপুর হয়ে উঠেছে সমতাঘাটের বাজার। রসালো আনারসের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারদিকের পরিবেশ। তবে আনারসের আগাম ফলন ভালো হওয়ায় এবং ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষিরা। বর্তমানে রাঙামাটি শহরের বাজারগুলোতে জমজমাট বিক্রি হচ্ছে আনারস। এছাড়াও নানিয়ারচর, বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নসহ পুরো জেলার আনারস সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

এদিকে, স্থানীয়রা আগাম আনারস খেতে পেয়ে অত্যন্ত খুশি। স্থানীয় হাট-বাজার থেকে এনে অনেকে ফেরি করে শহরের বিভিন্ন আনাচে কানাচে আনারস বিক্রি করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অদিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে আনারসের প্রচুর উৎপাদন হচ্ছে। সবচেয়ে অধিক উৎপাদন হয়েছে নানিয়ারচর উপজেলায়। বাজারে বড় সাইজের প্রতি জোড়া আনারস খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আর ছোট সাইজের আনারস বিক্রয় হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। তবে কৃষকদের কাছে পাইকাররা কিনছেন মাত্র ২০-৩০ টাকায়। নানিয়ারচরসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আনারস জেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে রাঙামাটির আনারস যাচ্ছে ঢাকা, শরীতপুর ও চট্টগ্রামসহ অনেক জেলাতে।

চাষিরা মনে করছেন, করোনার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত বার আগাম আনারস চাষিরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফলে এবার ভালো ফলন হওয়ায় তা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

উপজেলার হাজাছড়া এলাকার বাসিন্দা আনারস চাষি শান্তি বিকাশ চাকমা বলেন, “আমি ৩০ হাজার আনারস চারা রোপণ করেছি। গতবারের তুলনায় এবার ভালো ফলন হয়েছে। ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে। আনারস চাষ করতে যা খরচ হয়েছে তার দ্বিগুণ লাভ করতে পারব। বড় সাইজের আনারস বিক্রি করছি জোড়া ৩০-৪০ এবং ছোট সাইজের আনারস বিক্রি করছি ১৫-২০ টাকা ধরে।”

রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নের আরেক চাষি সোহাগ চাকমা জানান, গতবারের তুলনায় এবার আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর করোনায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় যা ক্ষতি হয়েছে তা এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করেন।

এবার ৩০ হাজার আনারসের চারা রোপণ করেছেন বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, “এ মৌসুমে জেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ২১৩০ হেক্টর জমিতে। এবার আগাম ১১০০ হেক্টর জমিতে আগাম মৌসুমি আনারসের চাষ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন ধরা হয়েছে ২০ মে:টন। এতে করে প্রায় ২২ হাজার মে: টন আনারস উৎপাদন হয়েছে। আগাম আনারস চাষে ফলন বৃদ্ধির জন্য এক ধরনের ভিটামিন ব্যবহার করা হয়। তবে এই ভিটামিন মানবদেহে তেমন ক্ষতিকারক নয়। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের সুপরামর্শ দিয়ে থাকে। জেলার প্রত্যেক উপজেলাতে আমাদের উপসহকারীরা কৃষকদের সহায়তায় সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন।”