কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
শনিবার উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন মকবুল হোসেন (৪০) ও পাভেল শেখ (১৭)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খলাপাড়া গ্রামে বোধাই ব্যাপারীর বাড়ির একটি গোষ্ঠী আছে। ওই গোষ্ঠীর লোকজন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে জীবন যাপন করে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন ওই বংশের আক্কাস আলী। অপর অংশের নেতৃত্বে আছেন একই বংশের আক্তার মিয়া। এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস আগে থেকে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে খলাপাড়া এলাকায় উভয় পক্ষের কয়েকজন কথা-কাটাকাটিতে জড়ান। মুহূর্তেই এই খবর দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের সহস্রাধিক মানুষ লাঠিসোটা, দা, বল্লম নিয়ে খলাপাড়ার মেঘনা নদীর পাড়ে জড়ো হন। সংঘর্ষ চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে বুকে বল্লম বিদ্ধ হন আক্কাসপক্ষের মকবুল। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মকবুল খলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বেলা একটার দিকে বল্লম বিদ্ধ হন একই পক্ষের পাভেল শেখ। পাভেলও ঘটনাস্থলে মারা যান। পাভেলের বাড়ি লুন্দিয়া গ্রামে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আক্কাসপক্ষের ১২ জনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আক্তার পক্ষের লোকজন ভৈরবের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নিহত মকবুল হোসেনের স্ত্রী শেফালি বেগমের বলেন, “ঝগড়ার কথা শুনে আমার স্বামী ঘর থেকে বের হয়ে যান। কার সঙ্গে কার ঝগড়া হচ্ছে এবং কেন হচ্ছে, এসবের কিছু না জেনেই দৌড়াতে থাকেন।”
একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেওয়া আক্কাস আলীর ভাষ্য, “আক্তার এলাকায় একক প্রভাব বিস্তার করে চলতে চান। তার পক্ষের লোকজনের অত্যাচারে এলাকায় এখন আর স্বাভাবিক অবস্থা নেই। এই অবস্থায় আমরা চেয়েছিলাম এলাকায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে। আজ কোনো কারণ ছাড়া আক্তারপক্ষ আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার পক্ষের দুজন মারা গেছেন।”
অভিযোগের বিষয়ে আরেকটি গোষ্ঠীর নেতৃত্বে থাকা আক্তার মিয়ার ভাষ্য, “সকালে তেমন কোনো কারণ ছাড়াই আক্কাসপক্ষ আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। তখন আমার লোকজন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।”
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন বলেন, পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে এলাকায় পুলিশ রাখা আছে।