মাগুরার মহম্মদপুরের দাতিয়াদহ গ্রামের এক সময়ের হতদরিদ্র কৃষক আমিন মোল্লার (৫০) খামারের কোরবানির উপযোগী ৫টি গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে কোরবানির পশুর দাম কমে যাওয়ায় এ দুশ্চিন্তার কারণ।
আমিন মোল্লা জানান, ১০ বছর আগে অভাবগ্রস্ত সংসারে চাকা ঘোরাতে তিনি স্থানীয় একটি হাট থেকে ১৯ হাজার টাকায় কিনেন ফ্রিজিয়ান জাতের একটি বকনা বাছুর। নিরলস পরিশ্রম ও পরিচর্যায় মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এ বকনা বাছুর বাচ্চা দিতে শুরু করে। একে একে বাড়তে থাকে খামারের পরিসর। ১০ বছরে তিনি মালিক হন ৩২টি গরুর। যার মধ্যে ১৪ টি গরু তিনি বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তার খামারে আছে ১৮টি গরু। এ সব গরুর মধ্যে ৬ টি গাভী নিয়মিত দুধ দিচ্ছে। যার পরিমাণ প্রতিদিন ৮০ লিটার। এ দুধ বিক্রির টাকায় এখন সচ্ছলভাবে চলছে তার সংসার। এছাড়া ইতিপূর্বে গরুর বিক্রিত টাকায় তিনি কাঁচা ঘরের স্থলে বাড়িতে পাকা ঘর দিয়েছেন। কিনেছেন ৬০ শতাংশ জমি।
গরুগুলোকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই লালন পালন করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন নামে ডাকেন গরু গুলোকে। কোরবানির উপযোগী ৫টি গরুর নাম দিয়েছেন ঝুমুর ওজন ২৬ মণ, জলহস্তির ওজন ২৫ মণ, রাজা বাবুর ওজন ২৪ মণ, বাহাদুরের ওজন ১৬ মণ ও টাইগারের ওজন ১২ মণ। এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন হাটে কোরবানির পশুর দাম কমে যাওয়ায় আমিন মোল্লার তার খামারে থাকা কোরবানির উপযোগী ৫টি গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
তার খামার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে থাকা সবগুলি গরুই উন্নত জাতের।পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিয়মিতভাবে এখানে শ্রম দেন। গরুগুলোকে তিনি সাধারণত নিজের ক্ষেতে উৎপাদিত নেপিয়ার ঘাস খাওয়ান। এছাড়া ভুসি, খড় ও বিভিন্ন জাতের ফল শাক সবজি। এই গরুগুলাকে কখনই কারখানায় উৎপাদিত কোন খাবার খাওয়ানি বলে জানিয়েছেন আমিন মোল্যা। যে কারণে এ গুলো দেশি জাতের গরুর মতোই বেড়ে উঠছে।
এ বিষয়ে প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ হাদিউজ্জামান জানান,খামারিদের উন্নয়নে তারা প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেয়াসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছেন।
জাগরণ/এমআর