দশমিনা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত কবি নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী মামুন মৃধার পরিবার এখনও ছেলের ছবি নিয়ে কেঁদে চলছে। প্রতি বছর এই দিনে তারা নিহত মামুনের জন্য পাগল হয়ে যায়। গতকাল শনিবার সকালে স্থানীয় একদল সাংবাদিক নিহত মামুনের বাড়িতে গেলে মামুনের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়ে।
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আলিপুরা গ্রামের দিনমজুর মতলেব মৃধা ও গৃহিনী মোর্শেদা বেগমের ছেলে আর চার মেয়ের মধ্যে মামুন সবার বড়। ছেলেকে ঘিরে আনেক স্বপ্ন ছিল পরিবারের। দশমিনার পশ্চিম আলীপুর ব্রজবালা রায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে এসএসসিতে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন মামুন মৃধা। ভর্তি হন ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে কিন্তু একুশে আগস্ট ঘাতকদের ছোড়া গ্রেনেডে চূরমার হয়ে যায় মামুনের হতদরিদ্র মা-বাবাসহ পরিবারের স্বপ্ন।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মামুনের পরিবার রায় কার্যকর দেখে মরতে চায় মা-বাবাসহ পরিবারবর্গ। মা-বাবার একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে রায় কার্যকরের দিন গুনছে গোটা পরিবার। বাবা ও মায়ের শরীরে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগের। এখন তাদের একটাই চাওয়া ঘাতকদের ফাঁসি দেখে যেন আমরা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে আর তার মুখের ভাষণ শুনতে গিয়ে ঘাতকের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ঢাকার কবি নজরুল ইসলাম কলেজের মেধাবী ছাত্র মামুন মৃধা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মামুনের পরিবারকে ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর ১০ লাখ টাকার অর্থ সাহায্য করেছিলেন। সোনালী ব্যাংক পটুয়াখালী শাখায় জমা রাখা ওই টাকার মুনাফা দিয়ে তাদের সংসার চলে। প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় মামুনের মেজ বোনের স্বামীকে একটি ব্যাংকে চাকরি দেয়া হয়।
নিহত মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা বলেন, আমার শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে। কোন কাজকর্ম করতে পারি না। আমার বুকের ধনকে যারা কেড়ে নিয়েছে তাদের ফাঁসি দেখতে চাই। এ বিচার টুকু দেখার জন্যই সৃষ্টিকর্তা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। ঘাতকদের বিচার হলে মরে গিয়েও শান্তি পাব। আমার ছেলের আত্মায় শান্তি পাবে।
জাগরণ/এমআর