স্বেচ্ছাশ্রমে দীর্ঘ কাঠের সাঁকো, দাবি স্থায়ী সেতু

পটুয়াখালী প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২১, ১১:৪৮ এএম স্বেচ্ছাশ্রমে দীর্ঘ কাঠের সাঁকো, দাবি স্থায়ী সেতু

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
৩০০ ফুট দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকোটি ছিলো মহাদুর্ভোগের কারণ। প্রায় এক যুগ আগে স্বেচ্ছাশ্রমে আমলাভাঙা খালের ওপর সাঁকোটি নির্মাণ করেছিল গ্রামবাসী। এরপর প্রতি বছরই মেরামত করে পারাপার হয়ে আসছেন এলাকার লোকজন। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহারে সেটি  নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। লোকজন ওঠলেই থরথর করে কেপে উঠতো। তবুও বাধ্য হয়ে এ সাঁকোটি দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন চলাচল করছিল। সর্বশেষ চলতি মাসে স্থানীয়রা পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের দক্ষিণ কাজিরহাওলা ও কাছিয়াবুনিয়া গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া আমলাভাঙা খালের ওপর বাস্তবায়ন করেন ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতু। 

জানা গেছে, ২০০৮ সালে উপজেলার কাছিয়াবুনিয়া ও দক্ষিণ কাজির হাওলা গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া আমলাভাঙা খালের ওপর ৩০০ ফুট লম্বা একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। আর সেই সাঁকো পেড়িয়ে দক্ষিণ কাজির হাওলা, উত্তর কাজিরহাওলা, গাদুলা, নিজ হাওলা, উনিশ নম্বর রাঙ্গাবালী ও কাছিয়াবুনিয়া গ্রামের অন্তত এক হাজার লোক পারাপার হয়ে থাকেন। তাছাড়া  সেতুর উত্তর পাড়ে দক্ষিণ কাজির হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর দক্ষিণ পাড়ে রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদ, রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, রাঙ্গাবালী হামিদিয়া রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজ, কাছিয়াবুনিয়া মাধ্যমিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। তাই দক্ষিণ কাজির হাওলা, উত্তর কাজিরহাওলা, গাদুলা, নিজ হাওলা, উনিশ নম্বর  ও কাছিয়াবুনিয়া গ্রামের অন্তত এক-দেড় হাজার লোকের প্রতিদিন আমলাভাঙা খাল পারাপার হতে হয়। তাই স্থায়ী দুর্ভোগ লাঘবে সরকারিভাবে একটি সেতু  নির্মাণের দাবি গ্রামবাসীর।সরেজমিনে দেখা গেছে, ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যায়ে ২২ দিন ধরে আমলাভাঙ্গা খালে প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করছে গ্রামবাসী। গত তিনদিন আগে শেষ হয়েছে নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে সেতু দিয়ে লোকজন পারাপারও হতে শুরু হয়েছে। 

দক্ষিণ কাজির হাওলা গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আমাদের এই আমলাভাঙা খালটা দিয়ে লোকজন পারাপারে খুবই অসুবিধা তারপর আমরা গ্রামবাসি সকলের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে প্রথমত আমাদের নিজেদের উদ্যোগে ২০০৮ সাল থেকে আমরা এই সাঁকোটি দিয়েছিলাম। আমাদের ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা দিয়ে গ্রামবাসীর অর্থায়নে নির্মাণ করেছি। কিন্তু চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আমলাদের শরনাপন্ন হয়েছি তারা আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু সুরাহ হয়নি। চলতি বছর আমরা উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে গিয়েছিলাম তিনি আমাদের কাজে সহযোগীতা করেছেন এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি অনুদান দিয়েছেন তাতে আমাদের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি পরে গ্রামবাসি একত্রিত হয়ে আরো ১লাখ ৪৬ হাজার টাকা যোগান দিয়ে কাঠের সেতু নির্মাণ করি। 


উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির আহম্মেদ বলেন, আমলাভাঙা খালের ওপর দীর্ঘদিন যাবত ওখানকার লোকজন একটি বাঁশের সাঁখো পেড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে আসছে। চলতি অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের দুই ধাপে ৯০ হাজার টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে এবং আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অর্থ যোগান দিয়েছি। একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করার জন্য । ওখানে যাতে একটি স্থায়ী সেতুর নির্মাণ হয় সে বিষয়ে  সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করছি। যাতে দ্রুত  গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাগোব হয়। উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিজানুল কবির বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জায়গা পরিদর্শন করে আয়রণ ব্রীজ প্রকল্পে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।  

জাগরণ/এমআর