আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী
আগামীকাল সোমবার নোয়াখালী শহরে জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির নের্তৃত্ব প্রত্যাশী তিন নেতার সমর্থনে ও আয়োজনে পৃথক পৃথক নের্তৃত্বে দলীয় নামের তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একেকটি সভা একেক শিরোনামে আয়োজিত করার উদ্যোগ নিলেও মূলত, সবগুলোয় স্ব-স্ব ব্যানারের নেতারা নিজেকে নের্তৃত্বের যোগ্যতা প্রমাণের লক্ষ্যে প্রর্দশনী আকারে মাঠ সরগরম করার চেষ্টা বলে ধারণা করছেন জেলার রাজনৈতিকবোদ্ধারা।
সভা ঘিরে তিনগ্রুপের মধ্যে রয়েছে চরম উত্তেজনা। যে কোন মুহুর্তে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সমাজসচেতনরা।
সোমবারের সভাকে নোয়াখালীর সদর ও সুবর্ণচর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর জনপ্রিয়তা প্রদর্শনের আরেকটি দাপ হিসেবে সফল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দফায় দফায় মিলিত হয়েছেন তাঁর সমর্থকরা।
এদিকে, একইদিন নোয়াখালী টাউন হল মোড়ে সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন ও নোয়াখালী পৌরমিলনায়তনে মেয়র শহিদ উল্লাহ খান সোহেলের সমর্থনেই পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার উদ্যোগ ও আয়োজনের বাতাস বইছে চারদিকে।
একরামুল করিম চৌধুরীর সমর্থনে বিশাল গণজমায়েত করতে গত ক'দিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিণ্টু, মাওলা জিয়াউল হক লিটন ও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এ কে এম শামছুদ্দিন জেহানের নেতৃর্ত্বেই দফায় দফায় পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এছাড়া, কবিরহাটের প্রায় ইউনিয়নেও একরামুল করিম চৌধুরীর সমর্থনে দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানের খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিনের সমর্থনে সদর উপজেলার প্রায় ইউনিয়নে দলীয় নেতা, কর্মীদের সাথে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে জানা গেছে।
মেয়র শহিদ উল্লাহ খান সোহেলের সমর্থনে তার কর্মী ও সমর্থকেরাও দফায় দফায় সদর উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মিলিত হয়েছেন।
তবে সবগুলো সভায় জেলা সম্মেলনে মৌখিকভাবে ঘোষিত আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। অবশ্য, এ বিষয়ে জানতে তাঁকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
একইদিন, একই দলের তিননেতার নেতৃর্ত্বে ও কর্তৃত্বে জেলা শহরের তিনটি স্থানের প্রকাশ্য সভা, সমাবেশ ঘিরে জেলার সামাজিক ও রাজনৈতিকমহলে নানা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে।
অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানতে চাইছেন, এসব নেতারা নিজের আধিপত্য কিংবা সমর্থন জানান দিতে নিজ দলের মধ্যেই এবার শৃঙ্খলাভঙ্গ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, হানাহানিতে লিপ্ত হচ্ছেন নাতো! যদি তাই হয়, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগে এ কলঙ্কের দায় কে এড়াবে!
গত ৩ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ঢাকায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত করে জেলার বর্ষীয়ান আ'লীগ নেতা খায়রুল আনম সেলিমকে আহবায়ক করে ৩০ সদস্যের আহবায়ক কমিটি আসছে-বিভিন্ন মাধ্যমে এমন খবর প্রচারিত হওয়ার পরই উপরোক্ত নেতারা এ সভা সমাবেশের তোড়জোড় শুরু করেন।
উল্লেখ্য, জেলার কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপের হানাহানিতে ইতোপূর্বে এক সংবাদকর্মীসহ দু'জনের প্রাণহাণি হয়েছে। তবু আজও সেখানে সংঘাত, সংঘর্ষ, হুমকি, পাল্টা হুমকি-ধমকি বন্ধ হয়নি।