টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করার পরে এখন অপেক্ষায় রয়েছন সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। টিকার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করার পরও টিকা নিতে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা না পেয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। দেশে ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হলেও এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি বলে অভিযোগ করেন নিবন্ধনকারী ভোক্তভোগীরা।
তাদের মধ্যে কেউ কেউ একমাসের বেশি আগে নিবন্ধন করলেও এখনো সংশ্লিষ্ট বুথ থেকে কোন বার্তা পাননি। যারা টিকা নিয়ে কোন বার্তা পাননি, তাদের কী হবে?
জেলা সিভিল সার্জন সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলায় টিকা নেয়ার জন্য অনলাইনে মোট নিবন্ধন করেছেন ৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৬১৬জন। ১ম ডোজ এবং ২য় ডোজ নিয়ে মোট টিকার আওতায় এসেছেন ৩ লক্ষ ৫ হাজার ৮৫৪জন।
এর মধ্যে ২য় ডোজ পর্যন্ত টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়েছে ৮২০৪৪ জনকে। এবং প্রথম ডোজ দিয়ে ২য় ডোজের অপেক্ষায় রয়েছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৮১১জন। এবং মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা না পাওয়ায় টিকা অনিশ্চয়তায় রয়েছেন ১১ হাজার ৭৬১জন। টিকা মজুত রয়েছে সিনোফার্মার ১ লক্ষ ১৫ হাজার ১৭৯ ডোজ, এবং কোভিশিল্ডের ২৪৮০ ডোজ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, করোনার এই মহামারি থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে নিরাপদ রাখার জন্য টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু মাসের পর মাস পার হলেও তারা কোনো সাড়া না পেয়ে হতাশায় আছেন। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল কোনো কাজের ক্ষেত্রেও টিকার প্রাপ্তির সনদ লাগে। টিকা না পাওয়ায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলেও জানান তারা।
সুনামগঞ্জ শহরের পশ্চিম তেঘরিয়ার বাসিন্দা দুলাল মিয়া জানান, দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য ১৯ আগষ্ট ভ্যাকসিনের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত মোবাইলে কোনো ক্ষুদে বার্তা আসায় ভিসা প্রসেসিংসহ প্রাবাস গমনে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তিনি।
সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের রঙ্গারচর গ্রামের মাধ্যম বয়সী নারী জামিনা খাতুন জানান, প্রায় ২০দিন আগে টিকার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেও এখন পর্যন্তন মোবাইলে কোনো বার্তা পাননি তিনি। নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও ভ্যাকসিন আদৌ পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
দুলাল মিয়া ও জামিনা খাতুনের মত এমন শতাধিক মানুষ রয়েছেন যারা টিকা জটিলতায় ভুগছেন। ফলে তাদের বিদেশ গমনসহ জরুরি কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন জানান, এতদিন টিকা সংকট থাকার কারনে নিবন্ধনকারীদের মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা যায়নি। এখন আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকার মজুত রয়েছে। টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তার কিছু নেই। আর নিবন্ধনের ধারাবাহিক মানতে গিয়ে অনেকের মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা যেতে একটু সময় লাগছে। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। তবে আজ প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ৬০ হাজার মানুষকে ২য় ডোজ আওতায় আনা হবে। এবং পরবর্তীতে রুটিন অনুযায়ী বাকিদেরকে ২য় ডোজের আওতায় আনা হবে।
জাগরণ/এমআর