'আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে'
–চড়ুই পাখিদের বড়াই করা সেই দিন নেই! কবি রজনীকান্ত সেনের দেখা চড়ুই পাখিদের অট্টালিকায় মহাসুখে থাকার দিন শেষ! আজ তাদের অট্টালিকা ছেড়ে ঠাঁই হলো বিদ্যুতের তারে।
মৌলভীবাজার জেলা শহরের ব্যস্ততম এলাকা চৌমুহনী চত্বর। এই চত্বর হয়ে যাওয়া সেন্ট্রাল রোডের ৫/৬টি বৈদ্যুতিক খুটিতে আশ্রয় নিয়েছে হাজারো চড়ুই পাখি। সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে এই স্থানটি কিচিরমিচির শব্দে মুখর হতে থাকে। ওদের কিচিরমিচির ডাক আর এক তার থেকে অন্য তারে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে যে কারোরই ভালো লাগবে।
প্রতিদিন বহু মানুষ ভিড় করেন এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে। বৈদ্যুতিক খুটিই চড়ুইয়ের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যতদিন যাচ্ছে চড়ুই পাখিদের সংখ্যা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাস দুয়েক হলো চড়ুইরা এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের দেখার জন্য দূর-দুরান্ত থেকে পাখিপ্রেমীরা সন্ধ্যার পর এখানে আসছেন।
ব্যস্ততম সড়কের ব্যবসায়ী রজত ভট্টাচার্য জানান, সন্ধ্যার পর চড়ুই পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয় এই এলাকা। এ দৃশ্য দেখতে খুবই ভাল লাগে। ব্যবসায়ীদের বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে তারা।
পরিবেশ ও সমাজকর্মী সোনিয়া মান্নান জানান, খড়কুটো, শুকনো ঘাসপাতা দিয়ি কড়িকাঠে, কার্নিশে বাসা বেঁধে বসবাস করতে এদের দেখা যায়। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক তারসহ বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে। সারাদিন ঘুরে বেড়ায় খাদ্যের সন্ধানে। চড়ুই মাটি থেকে পোকামাকড়সহ শস্য খুঁটে খায়। পরিবেশ সহায়ক প্রিয় পাখি চড়ুই সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে ও এদের বিলুপ্তি রুখতে যে যার অবস্থান থেকে সহায়ক কিছু একটা করার সুযোগ রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. নূর জাহান সরকার বলেন, চড়ুই পরিবেশবান্ধব। প্রকৃতিতে চড়ুইয়ের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অসচেতনতার কারণে সেটা বুঝতে পারি না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রকৃতি থেকে চড়ুইয়ের বিলুপ্তি ঠেকাতে হবে।
জাগরণ/এমআর