নারায়ণগঞ্জ (সিদ্ধিরগঞ্জ) প্রতিনিধি//
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ডে হাজী আনিসুর রহমানের ঠেলাগাড়ি প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় তার লোকজন একই ওয়ার্ডের ভোটার আব্দুল আজিজ শিকদার (৫৫) ও তার ছেলে জান্নাতুল নাঈম ফেরদৌস (২৬) এর উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় হামলাকারীরা তাদের ঔষধের দোকানের মালামাল ভাঙচুর করে এবং ভুক্তভোগীদের ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত ও মারধর করে। এতে ভুক্তভোগীরা গুরুতর আহত হলে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগে ওই ওয়ার্ডের সাইলো এলাকার হাবিবুর রহমান হাবিবের দুই ছেলে মিজানুর রহমান দিপু (৩৭) ও মিনহাজুর রহমান (২২), কদমতলী গ্যাসলাইন এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে তানজিম কবির সজিব ওরফে সজু (৩৫), পূর্ব কলাবাগের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. মাজেদুর ইসলাম (২৫) ও পশ্চিম কলাবাগের মুক্ত পচু বেপারীর ছেলে আঃ জব্বার (৪৫) সহ অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে বাদী জান্নাতুল নাঈম ফেরদৌস উল্লেখ করেন, বিবাদীরা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। তারা কোনো বিচার সালিশ মানেন না। বিবাদীরা নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন অন্য কোনো প্রার্থী বা প্রতীকের নির্বাচন যেন না করি, সে বিষয়ে আমাকে প্রায়ই কোনঠাসা করে আসছে। বিগত ১৬ জানুয়ারি সিটি নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ আনিসুর রহমান আনিসের ঠেলাগাড়ী প্রতীকের পরাজয় হওয়ার কারণে বিবাদীরা আমাকে প্রকাশ্যে বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছিল।
পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে প্রথমে মোবাইলে আমাকে ব্যবসা করতে দেবেন না এবং আমি নির্বাচনে তাদের দলীয় প্রতীকে ভোট দেইনি এজন্য আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর কিছুক্ষণ পরপরই সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে ২০/২৫ জন আমার (সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সোনামিয়া মার্কেট নতুন বাজার) সিকদার মেডিসিন কর্ণার নামক ফার্মেসিতে বে-আইনিভাবে লোক জড়ো করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ অনধিকার প্রবেশ করে আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে।
পরে আমাদের পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা বেদনাদায়ক জখম করে। আমি বাধা দিলে বিবাদীরা ধারালো রামদা দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ মেরে গুরুতর জখম করে। বিবাদীরা আমার ফার্মেসীর ক্যাশবাক্সে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং ফার্মেসীর ওষুধপত্র ভেঙে অনুমান ২০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে।
এ বিষয়ে নাসিক ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ সাদরিল বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। নির্বাচনে হেরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। এর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত জামিল জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।