দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও স্বার্থপরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়াকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সেই সাথে ওই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল বারিককে আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জি এম তালেব হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়াকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সাথে সাথেই তাদের স্বাক্ষরে অপর চিঠিতে আবদুল বারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরদিন বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চিঠি দুটি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. নুরুজ্জামানের বিরোধিতা করেছেন আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া। ফলে চিনিশপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসানের কাছে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হন। এ বিষয়ে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর তাকে একটি নোটিশ দেওয়া হয়। ৩০ ডিসেম্বর তিনি নোটিশের জবাব দেন। কিন্তু জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তা গ্রহণ করা হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও উঠান বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকলেও বারবার আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও তিনি আসেননি। অন্যদিকে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হওয়ার পর যুবলীগের এক কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করায় তাকে নিজ বাড়িতে আটকে শারীরিক নির্যাতন করেন আফতাব উদ্দিন। এ ছাড়া বিএনপির বিজয়ী চেয়ারম্যানের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জি এম তালেব হোসেন জানান, আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়ার এ ধরনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যকলাপে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। দলীয় স্বার্থে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও স্বার্থপরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দলীয় বিভাজন আরও স্পষ্ট করতে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা একটি পক্ষের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে কথা বলবো। এই বিষয়টি নিয়ে ঝামেলার কি আছে? উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অভিষেক অনুষ্ঠানে আমি যেতেই পারি।
দৈনিক জাগরণ/আরকে