বয়স্কদের টাকা লুটে নিতো সংঘবন্ধ চক্র

ফরিদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২২, ১০:৪২ এএম বয়স্কদের টাকা লুটে নিতো সংঘবন্ধ চক্র

পেনশন বা সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলতে আসা বয়স্ক ব্যক্তিরা ছিল তাদের টার্গেট। দেশের বিভিন্ন জেলার সরকারি, বেসরকারি ব্যাংক কিংবা পোস্ট অফিসে টাকা তুলতে আসা মানুষ গুলোর উপর জরিপ করে নানা কৌশলে একটি সংঘবন্ধ চক্র অসহায় মানুষের টাকা লুটে নিতো তারা। 

সতের বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছিল এই অপরাধ কর্মকান্ড। লোক বুঝে টার্গেট করে তার পিছু নিয়ে সুযোগ বুঝে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালাতো এই চক্রটি। কেউ ব্যাগ নিয়ে পালাতো, সাথে থাকা সঙ্গীরা পালানোর রাস্তা তৈরী, টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া চোরকে প্রটেকশন দিতে আবার আশে পাশে থাকতো অন্য কেউ। 

এভাবেই দিনের পর দিন টাকা লুটের কাজ করতো তারা। সম্প্রতি ২০ লক্ষ ছিনতাই হওয়া মামলায় এমন দুই সদস্যকে ১৩ লক্ষ টাকা উদ্ধারসহ আটক করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ। চক্রের অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা। 

গ্রেপ্তারকৃত ওই দুই জন হল- খুলনার হরিণটানা থানার গোলাডাঙ্গা গ্রামের মৃত ফটিক শেখের ছেলে ফারুক শেখ (৬০) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার পূর্ব কোলা গ্রামের মো. জৈনদ্দিন ওরফে জিয়াউদ্দিনের ছেলে মো. আলী (৪৫)। 

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ভোররাত থেকে পৃথক স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ফারুকের নামে গাইবান্ধা থানায় অন্য একটি মামলা রয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা সুমন রঞ্জন কর জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারিতে ফরিদপুরের প্রধান পোষ্ট অফিসে বাবার পেনশনের ২০ লাখ টাকা তুলতে যান নজরুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তি। টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় থেকেই তাকে ঘিরে ধরে এবং পোষ্ট অফিসে সুবিধা করতে না পেরে টাকা নিয়ে বের হওয়ার পর নজরুলকে অনুসরণ করে ব্যাংক পর্যন্ত যায়। নজরুল ম্যানেজারের কক্ষের সোফায় টাকার ব্যাগ রেখে ক্যাশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে পাশের রুমে যায়। এসময় ওই তিনজন সেখানে ছিল। তাদের একজন টাকার ব্যাগটি নিয়ে যায়। আরেকজন রাস্তা দেখিয়ে দেয় এবং অপরজন তাকে প্রটেক্ট করার জন্য অবস্থান নিয়ে দাঁড়ায় যাতে কেউ ধাওয়া করলে সে বাধা দিতে পারে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হাসান জানান, সোনালী ব্যাংকের নিম্নমানের সিসি ক্যামেরার থাকায়, ওই ফুটেজ থেকে জড়িতদের চিহ্নিত করতে খুব কষ্ট হয়েছে। 

পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় ব্যাংকে গার্ড ছিল না। এই ঘটনায় ব্যাংকের ম্যানেজার জড়িত সম্ভাবনা না থাকলেও তার নেগলেসি আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা গেলে বাকি টাকা উদ্ধার করা যাবে।

জাগরণ/আরকে