প্রাক্তন স্ত্রীকে তুলে নিয়ে টানা ৮ দিন ধর্ষণ

ফরিদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২২, ০৫:০০ পিএম প্রাক্তন স্ত্রীকে তুলে নিয়ে টানা ৮ দিন ধর্ষণ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় তালাকের পর প্রাক্তন স্ত্রীকে টানা ৮ দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ২৪ মার্চ ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার নারী।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর আগে পাশের নগরকান্দা উপজেলার এক ছেলের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে হয়। সেই সংসারে তার একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু তিনি বাবার বাড়ি বেড়াতে এলে তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত প্রতিবেশী শাহজাহান শেখের ছেলে ফুয়াদ শেখ। এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সে। পরে প্রায় মাস দেড়েক আগে তার স্বামীকে তালাক দেওয়ায় ফুয়াদ। পরে ফুয়াদ তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে।

বিয়ের মাসখানেক না যেতেই গত ১০ মার্চ আবার তাকে তালাকও দেয় ফুয়াদ। শনিবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীকে বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান ফুয়াদ ও তার সহযোগী সাহিদ শেখ, জাকির মাতব্বর, মুরাদ খালাসী ও জাফর শেখ। এরপর ফরিদপুর শহরে জাকিরের বাসায় আটকে রেখে টানা আটদিন ধর্ষণ করে ফুয়াদ। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভুক্তভোগী মামলা করতে চাইলে গত ১৯ মার্চ রাতে ফুয়াদ ও তার সহযোগীরা তাকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ঐ সময় পিটিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরে ২০ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে তাকে বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় ফুয়াদ ও তার সহযোগীরা। তখন বাড়ির লোকজন তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় ফুয়াদ শেখ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আমার মেয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়। মামলার পর থেকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামিরা আমার স্বামী ও সন্তানদের এলাকা ছাড়া করে রেখেছে। এমন কি আমাদের জমির পেঁয়াজও তুলতে দিচ্ছে না তারা।

অভিযুক্ত ফুয়াদ শেখের বাবা ইউপি সদস্য শাহজাহান শেখ বলেন, ঘটনাটি সাজানো নাটক। আমাদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ঐ মেয়েকে আমার ছেলে বিয়ে করেছিল। বিয়ের পর আবার তালাক দিয়েছে। তালাকের পর নতুন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রশিদ বলেন, ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ফরিদপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশনা আমরা এখনো হাতে পাইনি। নির্দেশনা পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

ইউএম