বিয়ে করতে দেখতে যান মেয়ে। কিন্তু বয়স দ্বিগুণ হওয়ায় আটকে যায় বিয়ে। তবু পাত্রীর মুঠোফোন নম্বর নিয়ে করেন যোগাযোগ। আর একদিনেই গড়ে তোলেন সুসম্পর্ক। সেই সুবাদে মেয়েটিকে নিয়ে আসেন নিজ এলাকায়। দিনভর ঘোরাঘুরি শেষে রাতে মেয়েটিকে নিয়েই নিজ বাড়ির পথে রওনা দেন পাত্র। পথেই তাদের আটকান কয়েকজন। পাত্রের সঙ্গে থাকা মেয়েকে বাগানে নিয়ে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করেন তারা। তবে এর পেছনে পাত্রের হাত রয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার রাতে ৯টার দিকে উপজেলার কলেজপাড়া-রিধইল সড়কের পাশে ইউক্যালিপ্টাস বাগানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ২২ বছর বয়সী ওই তরুণী।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার রিধইল গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শাহাদত হোসেন, নন্দীগ্রাম কলেজপাড়ার গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী হযরত আলী ও ২৫ বছর বয়সী সুমন আলী।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলায়। বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান আনোয়ার। কিন্তু শাহাদতের বয়স বেশি হওয়ায় বিয়েতে রাজি হয়নি তরুণীর পরিবার। এরপরও তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ রাখেন শাহাদত। একদিনেই গড়ে তোলেন সুসম্পর্ক। এরই সুবাদে বিয়ের প্রলোভনে শুক্রবার মেয়েটিকে নিয়ে নন্দীগ্রামে আসেন তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তাকে নিয়ে ঘোরাফেরা করেন। পরে রাতে তাকে নিয়ে নিজ গ্রামে যাচ্ছিলেন শাহাদত। পথে হযরত আলী, সুমনসহ আরো কয়েকজন তাদের পথরোধ করেন। এরপর তরুণীকে সড়কের পাশের একটি ইউক্যালিপ্টাস বাগানে নেন তারা। সেখানে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরে রাতেই স্থানীয়ভাবে ঘটনাটি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। একপর্যায়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান ভুক্তভোগী তরুণী। এরপর রাতেই শাহাদতকে আটক করে পুলিশ। মামলার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এছাড়া সকালে অভিযান চালিয়ে আরো দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার রাতেই ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণী। মামলায় ছয়জনের নামসহ আরো তিন-চারজনকে আসামি করা হয়। পলাতক আসামিরা হলেন- নন্দীগ্রাম কলেজপাড়া গ্রামের ২১ বছর বয়সী মনির হোসেন, ২৪ বছর বয়সী বিজয় ও ২২ বছর বয়সী রাকিবুল ইসলাম।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, শাহাদতের সঙ্গে ওই তরুণীর কী সম্পর্ক ছিল তা এখনো জানতে পারিনি। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
ওসি আরো বলেন, বয়স বেশি হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাব মেনে নেয়নি ভুক্তভোগী তরুণীর পরিবার। পরে কৌশলে একদিনেই তার সঙ্গে মুঠোফোনে ভালো সম্পর্ক করে নন্দীগ্রামে নিয়ে আসেন শাহাদত। তিনি খুব চতুর প্রকৃতির মানুষ।
ইউএম