গোদাগাড়ীর নলকূপ অপারেটর বরখাস্ত

রাজশাহী প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২২, ০২:৩৪ পিএম গোদাগাড়ীর নলকূপ অপারেটর বরখাস্ত

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘুটু গ্রামের দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর চাকরি হারালেন গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন (৩০)। 

নলকূপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) রোববার (৩ এপ্রিল)  দুপুরে তার নিয়োগ বাতিল করেছে।

বিএমডিএর রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী জিন্নুরাইন খান জানান, সাখাওয়াতের নিয়োগ স্থায়ীভাবেই বাতিল করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক তিনি সাখাওয়াতকে বরখাস্ত করেছেন বলেও জানান জিন্নুরাইন খান।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে গোদাগাড়ীর কদমশহর এলাকা থেকে সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ২৫ মার্চ থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর রোববার দুপুরে গোদাগাড়ী থানা-পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ড চেয়েছে।

গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, আদালত আসামি সাখাওয়াতকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলেও শুনানি হয়নি। দু-এক দিন পর শুনানি হতে পারে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাঁকে থানায় নিয়ে ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গত ২৩ মার্চ নিমঘুটু গ্রামের সাঁওতাল কৃষক অভিনাথ মারান্ডি (৩৭) ও তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি (২৭) বিষপান করেন। এতে অভিনাথ ২৩ মার্চ ও রবি ২৫ মার্চ মারা যান। পরিবারের দাবি, বিএমডিএর ঈশ্বরীপুর-২ গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত ওই দুই কৃষককে বোরো ধানের জমিতে পানি দিচ্ছিলেন না। পানি না দিয়ে দুই কৃষককে বিষ খেতে বলেছিলেন অপারেটর সাখাওয়াত। তাই তারা দুজনে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। তারা বিষপানের পর তাদের জমিতে রাতে পানি দিয়েছিলেন সাখাওয়াত।

এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ মার্চ প্রথম মামলাটি হলেই সাখাওয়াত আত্মগোপনে যান। ২৪ মার্চ বাড়ি থেকে অভিনাথের মরদেহ উদ্ধারের সময় সাখাওয়াত হোসেন পুলিশের সামনেই ছিলেন। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে পানি না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়। তারপরেও পুলিশ সাদা কাগজে কৃষক অভিনাথের স্ত্রীর সই নিয়ে অপমৃত্যুর মামলা করে।

পরের দিন অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম গোদাগাড়ী থানায় গিয়ে ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াতকে একমাত্র আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। পরে হাসপাতালে রবি মারা গেলে তার ভাই সুশীল মারান্ডি বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন।

জাগরণ/আরকে